যোগী আদিত্যনাথ। ফাইল চিত্র।
বন্দি সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পানের সঙ্গে জঙ্গি সংগঠনের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে বলে সুপ্রিম কোর্টে দাবি করল যোগী আদিত্যনাথের সরকার। ২০২০ সালের অক্টোবরে হাথরসের ঘটনার পর থেকে উত্তরপ্রদেশে জেলবন্দি অবস্থাতেই দিন কাটছে কেরলের এই সাংবাদিকের।
কাপ্পানের জামিনের বিরোধিতা করে শীর্ষ আদালতে উত্তরপ্রদেশ সরকার যে হলফনামা দিয়েছে, তাতে দাবি করা হয়েছে, জঙ্গি সংগঠন পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া (পিএফআই) এবং তাদের ছাত্র সংগঠন ক্যাম্পাস ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়ার (সিএফআই) সঙ্গে কাপ্পানের যোগাযোগ রয়েছে। এদের সঙ্গে আবার আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল কায়দার ঘনিষ্ঠ কিছু সংগঠনের যোগাযোগ রয়েছে। সাংবাদিক কাপ্পান ইতিমধ্যেই দাবি করেছেন পিএফআই-এর মতো সংগঠনের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ নেই। তবে উত্তরপ্রদেশ সরকারের অভিযোগ, ২০০৯ সাল থেকে কাপ্পান ‘গাল্ফ তেজাস ডেলি’ নামে জেড্ডার একটি সংবাদপত্রে সাংবাদিক হিসাবে কাজ করছেন। এই সংবাদপত্রটি মালয়ালাম ভাষায় পিএফআই-এর মুখপত্র হিসাবে কাজ করে। ভারতে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানোই এর উদ্দেশ্য। গ্রেফতার হওয়ার সময় কাপ্পানের কাছে যে চারটি পরিচয়পত্র পাওয়া গিয়েছে, তার মধ্যে দু’টিই এই সংবাদপত্রের। ফলে উত্তরপ্রদেশ সরকারের দাবি, কাপ্পান হাথরসে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন জঙ্গি সংগঠন পিএফআই-এর প্রতিনিধিদলের সঙ্গে। সন্ত্রাস ছড়ানোই তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল।
রাজ্য সরকারের হলফনামায় আরও বলা হয়েছে, সিএফআই-এর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এবং সহ-অভিযুক্ত রউফ শরিফের নির্দেশেই প্রতিনিধিদলটি হাথরসে যাচ্ছিল। এর জন্য যাবতীয় যাবতীয় অর্থ রউফই দিয়েছেন। এছাড়া, গোষ্ঠী সংঘর্ষ ছড়ানোর ব্যাপারে বিশেষ কিছু শিক্ষা দেওয়ার পুস্তিকা মিলেছে কাপ্পানের গাড়ি থেকে। কোথায় গোলমাল বাধাতে হবে, কীভাবে পুলিশের থেকে নিজেদের লুকোতে হবে— সেসব ওই পুস্তিকায় লেখা রয়েছে। উত্তরপ্রদেশ সরকার জানিয়েছে, এই মামলায় চার্জশিট দেওয়া হলেও জঙ্গি সংগঠনের সম্পূর্ণ কার্যকলাপ সম্পর্কে জানতে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
কাপ্পানের বিরুদ্ধে যোগী সরকারের আরও অভিযোগ, মুজফ্ফরনগরের গোষ্ঠী সংঘর্ষে অভিযুক্ত আতিক-উর রহমান এবং বহরাইচের গোষ্ঠী সংঘর্ষে অভিযুক্ত মাসুদ আহমেদের সঙ্গে সফর করেছেন তিনি। একজন সাংবদিক হয়েও তিনি কীভাবে এই কাজ করলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।