বৃহস্পতিবার সন্ধে ৬টার কিছুক্ষণ আগে লখনউয়ে বিজেপি-র দফতরে প্রবেশ করে গোরক্ষপুর সদর আসনের জয়ী প্রার্থী যোগী আদিত্যনাথের কনভয়। হাওয়ায় গেরুয়া, লাল, হলুদ, সবুজ, কমলা, বেগুনি আবির উড়তে থাকে। হাত নাড়তে নাড়তে গাড়ি থেকে নেমে আসেন আদিত্যনাথ।
গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
বিকেল ৫টা ৫৭ থেকে ৬টা ১৪। সাকুল্যে ১৭ মিনিট সময়। তার মধ্যে ১৪ বার নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম। বার বার জানালেন অভিনন্দন এবং কৃতজ্ঞতা। আর ‘জয় জয় শ্রীরাম’ তিন বার। তা-ও ভাষণের একে বারে শেষে।
প্রথম বিধানসভা ভোটে নিজের আসনে লক্ষাধিক ভোটে জিতে লখনউয়ে বিজেপি-র দফতরে এসে যোগী আদিত্যনাথ ভাসলেন গেরুয়া, লাল, সবুজ আবিরে। লখনউয়ে এল অকাল হোলি।
যোগীর ১৭ মিনিটের নাতিদীর্ঘ বক্তৃতায় ঘুরেফিরে এল বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ-সহ বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের নাম। বিরোধ, বিবাদের লেশমাত্র নেই। যোগী ধন্যবাদ জানালেন বিজেপি-র সর্বস্তরের নেতাকর্মীদেরই। বললেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সুযোগ্য নেতৃত্বের গুণেই জাতীয়তাবাদ, উন্নয়ন ও সুশাসনের মডেলকে দু’হাত ভরে আশীর্বাদ করেছেন উত্তরপ্রদেশের ২৫ কোটি মানুষ। তারই ফল এমন ‘প্রচণ্ড’ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে দ্বিতীয় বার সরকার গড়ার সুযোগ পাওয়া।’’ মনে করালেন, এই বিপুল জয় দায়িত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ। বললেন, ‘‘জোশ কে সাথ সাথ, হোশ কো বনায়ে রাখ না হ্যায়।’’
‘বুলডোজার বাবা’ অন্তর থেকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের ‘মাতা-বহেন অওর বেটি’কে। তাঁর কথায়, ‘‘তাঁদের কৃপাদৃষ্টির জেরেই বিজেপি উত্তরপ্রদেশে ইতিহাস তৈরি করতে চলেছে।’’ বিরোধীদের আক্রমণ করে যোগী বলেন, ‘‘এই ভোটে পরিবারতন্ত্র ও বংশবাদের জলাঞ্জলি হয়েছে। বিরোধীদের লাগাতার সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্রের মুখের মতো জবাব দিয়েছেন রাজ্যবাসী।’’
বৃহস্পতিবার সন্ধে ৬টা বাজার কিছুক্ষণ আগে লখনউয়ে বিজেপি-র সদর দফতরে প্রবেশ করে গোরক্ষপুর সদর আসনের জয়ী প্রার্থী যোগী আদিত্যনাথের কনভয়। হাওয়ায় গেরুয়া, লাল, হলুদ, সবুজ, কমলা, বেগুনি আবির উড়তে থাকে। হাত নাড়তে নাড়তে গাড়ি থেকে নেমে আসেন আদিত্যনাথ। হামলে পড়ে জনতা। যোগীও হাসিমুখেই মাখেন আবির। তার পর উঠে যান দফতরের সামনে তৈরি করা অস্থায়ী মঞ্চে।
মঞ্চেই কিছুক্ষণ অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে হাসিমুখে আবির মাখামাখির পর মিষ্টির বাক্স খুলে নিজে হাতে যোগী খাইয়ে দেন সহকর্মীদের। তার পর ১৭ মিনিটের অ-যোগীসুলভ বক্তৃতা। যাতে নেই বুলডোজারের উল্লেখ। বরং আছে মানুষের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ। এই বিপুল জয়ে দায়িত্ব আরও বেড়ে যাওয়ার কথা। এবং অবশ্যই ১৪ বার মোদীনাম!