Pinarayi Vijayan

UP Assembly election 2021: বঙ্গ-কেরলের তুলনা টেনে সমালোচনার মুখে আদিত্যনাথ, বিদ্রুপ তৃণমূল, বিজয়নের

এ বারও যোগী সেটাই করেছেন। তৃণমূল মনে করছে, ভোটের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতি বাড়তি শক্তি জুগিয়েছে অখিলেশকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৬:১৯
Share:

ফাইল চিত্র।

লক্ষ্য শেষবেলায় মেরুকরণ। তাই উত্তরপ্রদেশের প্রথম পর্বের ভোটের সকালে যোগী আদিত্যনাথের বার্তা, বিজেপিকে ভোট না দিলে উত্তরপ্রদেশ কাশ্মীর, কেরল কিংবা পশ্চিমবঙ্গে পরিণত হবে। হিন্দু ভোটের মেরুকরণ করতে গিয়ে যোগীর এ ভাবে অন্য রাজ্যের তুলনা টানা নিয়ে সরব হয়েছেন দল নির্বিশেষে নেতারা। রাহল গান্ধী থেকে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন, তৃণমূলের সুখেন্দুশেখর রায় থেকে কংগ্রেসের শশী তারুর— সকলেই
একবাক্যে যোগীর সমালোচনা করেছেন। যোগীর ওই বার্তা ‘নিম্নরুচির’ বলে মন্তব্য করে তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, যোগীকে ভোট দিলে উত্তরপ্রদেশে হাথরস, উন্নাওয়ের মতো গণধর্ষণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে। দু’দিন আগেই বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচারে উত্তরপ্রদেশে গিয়ে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির মূল প্রতিপক্ষ সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবের সঙ্গে জনসভা করেন। রাজনীতির অনেকের মতে, একে অখিলেশের পাশে দাঁড়ানো ও অন্য দিকে মমতার বিরুদ্ধে বিজেপির তোলা মুসলিমপ্রীতির অভিযোগকে কটাক্ষ করতে গিয়েই কেরল, কাশ্মীরের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গকেও নিশানা করেছেন যোগী।

Advertisement

আজ ভোট ছিল পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের ৫৮টি আসনে। মেরুকরণের জেরে গত দু’টি লোকসভা ও পাঁচ বছর আগের বিধানসভায় পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে বিপুল জয় পেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু এ যাত্রায় কৃষক আন্দোলনকে ঘিরে ওই এলাকায় জাঠ ও মুসলিম ভোট এক হওয়ার ইঙ্গিত মেলার পর থেকেই আতঙ্কে বিজেপি নেতৃত্ব। পরিস্থিতি ঘোরানোর শেষ চেষ্টা হিসেবে একেবারে শেষবেলায়, বৃহস্পতিবার ভোর তিনটের সময়ে একটি ভিডিয়ো বার্তা সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেন যোগী। পাঁচ মিনিটের ওই বার্তার একেবারে শেষে তিনি বলেছেন, সঠিক জায়গায় ভোট না দিলে কেরল, কাশ্মীর কিংবা পশ্চিমবঙ্গে পরিণত হতে দেরি হবে না উত্তরপ্রদেশের।

মূলত উত্তর ও পশ্চিম ভারতের বিজেপি নেতাদের একটি বড় অংশ দীর্ঘ দিন ধরে প্রচার করছেন যে, কেরল বা পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যগুলিতে হিন্দুরা বিপন্ন। ভোট এলেই এ নিয়ে সরব হয় বিজেপি। এ বারও যোগী সেটাই করেছেন। তৃণমূল মনে করছে, ভোটের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতি বাড়তি শক্তি জুগিয়েছে অখিলেশকে। সে কারণে ঘুরিয়ে মমতার রাজ্যকে আক্রমণ শানানোর সুযোগ ছাড়তে চাননি যোগী। তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, ‘‘উন্নয়নের প্রশ্নে উত্তরপ্রদেশ যদি পশ্চিমবঙ্গ হয়, তা হলে ‘মা ফ্লাইওভার’কে নিয়ে আর টানাটানি করার প্রয়োজন হবে না যোগী প্রশাসনের। কন্যাশ্রী, স্বাস্থ্যসাথী পরিকল্পনা চালু হলে রাজ্যের মানুষের উপকার হবে। কিন্তু এই মুহূর্তে কর্মসংস্থান, বেকারত্বের কারণে ধুঁকছে দেশের সবচেয়ে বড় রাজ্য। যার প্রভাব পড়ছে গোটা দেশের উপরে। আর রাজ্যের মানুষ যদি ভুল করে বিজেপিকেই ভোট দিয়ে বসেন, সে ক্ষেত্রে ফের একটি হাথরস–উন্নাও এবং গুন্ডারাজ অপেক্ষা করেছ জনতার জন্য।’’

Advertisement

যোগীর ওই মন্তব্যের প্রতিবাদে তীব্র কটাক্ষের সুরে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেন, “যদি যোগীর কথা মতো উত্তরপ্রদেশ কেরল হয়, তা হলে তারা শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরিষেবা, সামাজিক উন্নয়নের নিরিখে দেশের মধ্যে এক নম্বরে উঠে আসবে। রাজ্যবাসী এমন এক সমাজে বাস করবেন, যেখানে মানুষ ধর্ম ও জাতের নামে খুন হবেন না।“ কেরলের কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুরের কটাক্ষ, ‘কাশ্মীরের সৌন্দর্য্য, বাংলার সংস্কৃতি ও কেরলের শিক্ষা পেলে তো উত্তরপ্রদেশের ভাগ্য খুলে যাবে!’ বিজেপির বিভেদমূলক রাজনীতির সমালোচনা করে সরব হয়েছেন রাহুল গাঁধীও। আজ টুইট করে ভারতের একাত্মবোধকে অপমান না করার পরামর্শ দিয়ে রাহুল বলেন, ‘একতার মধ্যে শক্তি থাকে। সংস্কৃতির একাত্মবোধ, বৈচিত্র্যের একাত্মবোধ, ভাষার একাত্মবোধ, মানুষের একাত্মবোধ, রাজ্যের একাত্মবোধ— কাশ্মীর থেকে কেরল। গুজরাত থেকে পশ্চিমবঙ্গ। ভারত তার সমস্ত রঙেই সুন্দর।’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement