ফাইল চিত্র।
উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনের আগে যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যের হাতে ৩৪১ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘পূর্বাঞ্চল এক্সপ্রেসওয়ে’ তুলে দিতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদী। লখনউয়ের সঙ্গে রাজ্যের আটটি জেলাকে সংযুক্ত করা এই এক্সপ্রেসওয়েতে সুলতানপুরের কাছে রয়েছে ৩.৩ কিলোমিটারের ‘এক ফালি’ রানওয়েও। যেখানে যুদ্ধবিমান আপৎকালীন পরিস্থিতিতে নামতে পারবে। মঙ্গলবার, এই সড়কের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের দিনে, ওই এয়ারস্ট্রিপে সি-১৩০ সুপার হারকিউলিস যুদ্ধবিমানে সওয়ার হয়ে এসে নামবেন খোদ প্রধানমন্ত্রী।
রাজনৈতিক শিবিরের মতে, উত্তরপ্রদেশে ভোটের মুখে শুধু মসৃণ সড়ক সংযোগ নয়, সঙ্গে নিজের এবং নিজের সরকারের শৌর্য এবং পরাক্রম তুলে ধরতে চাইছেন মোদী। অনেকেই বলছেন, মোদীর ‘৫৬ ইঞ্চি’ ভাবমূর্তির সঙ্গে এই বিমানে অবতরণের ঘনিষ্ঠ যোগ রয়েছে। সে দিন তিনি যে বক্তৃতা রাখবেন, সেখানেও রণংদেহি বার্তাই প্রকট হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ব্যালট যুদ্ধের কথা মাথায় রেখে আগে থেকেই মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ তাঁর বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রচারে তালিবান-তত্ত্ব সামনে এনে বার বার তাঁর সরকারের ‘শক্তিশালী ছবিকে’ তুলে ধরতে চাইছেন। সূত্রের বক্তব্য, এতে হিন্দুত্ব রাজনীতির পালে যেমন বাতাস লাগছে, তেমনই ‘পাল্টা’ দিতে গিয়ে প্রধান বিরোধী দল এসপি-ও মেরুকরণের বাকিটুকু সম্পূর্ণ করছে মহম্মদ আলি জিন্নার প্রশংসা করে। তাদের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ককে একত্রিত করার দায় রয়েছে। এবং সবটাই করা হচ্ছে উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে।
প্রধানমন্ত্রীর যুদ্ধবিমানের চাকা এক্সপ্রেসওয়ে ছোঁয়ার আগে থেকেই অবশ্য ভারতীয় শৌর্যের প্রদর্শনী শুরু হয়ে যাবে। মিরাজ-২০০০, এসইউ-৩০এমকেআই এবং রাজনৈতিক ভাবে বহু বিতর্কিত রাফাল-ও ওই এয়ারস্ট্রিপে নামবে একে একে।
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার অরুণাচল সংলগ্ন অঞ্চলে চিন পরিকাঠামো বাড়াচ্ছে, এমনকি গ্রাম তৈরি করে ফেলেছে বলে আমেরিকার সাম্প্রতিক রিপোর্টে উঠে আসায় শুরু হয়েছে বিতর্ক। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী বিষয়টিকে স্বীকার করে তাতে ঘি ঢেলেছেন। রাহুল গাঁধী-সহ কংগ্রেস নেতৃত্ব আঙুল তুলছেন মোদী সরকারের রণনীতি নিয়ে। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার যুদ্ধবিমানের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ছবিকে কার্যত একাকার করে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব রাজ্যের মানুষের মনে বল-ভরসা বাড়াতে চাইছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রকল্পের সঙ্গে রাজ্যের অর্থনীতিকে জুড়তেও তৎপর যোগী। তাঁর কথায়, “উত্তরপ্রদেশের পূর্বাঞ্চলের অর্থনীতির মেরুদণ্ড হবে এই এক্সপ্রেসওয়ে। পূর্বাঞ্চলের পরে বুন্দেলখণ্ড এক্সপ্রেসওয়ের কাজও আগামী মাসের মধ্যে হয়ে যাবে। গোরক্ষপুর এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে যুদ্ধকালীন তৎপরতায়।” এর মাধ্যমে লখনউ থেকে মাউ, আজমগড়ের মতো জেলা সংযুক্ত হবে বলে জানা গিয়েছে।