মায়াবতী। —ফাইল চিত্র।
উত্তরপ্রদেশে গত বারের বিধানসভা ভোটে মায়াবতীর কৌশলে সুবিধা পেয়ে গিয়েছিল বিজেপি। রাজনৈতিক শিবির মনে করছে আগামী ১০ তারিখ রাজ্যের প্রথম দফার ৫৮টি আসনের ভোটে এ বারেও তার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে।
তার কারণ ওই ৫৮টি আসনের মধ্যে এসপি-আরএলডি জোট ১৩ জন মুসলিম প্রার্থী দাঁড় করিয়েছে। মায়াবতীর বিএসপি-তে মুসলিম প্রার্থীর সংখ্যা ১৭। অর্থাৎ প্রথম দফার মোট আসনে এসপি-আরএলডি-র ২২ শতাংশ প্রার্থী মুসলিম, বিএসপি-র ২৯ শতাংশ। দেখা যাচ্ছে ৮টি আসনে বিএসপি এবং এসপি— এই দুই বিরোধী দলের মুসলিম প্রার্থী একে অপরের বিরুদ্ধে লড়ছেন।
স্বাভাবিক ভাবেই বিজেপির একটিও সংখ্যালঘু প্রার্থী নেই এই ৫৮টি আসনে। বিজেপি শিবিরের আশা, মুসলিম ভোট ভাগ হয়ে গিয়ে ওই আসনগুলিতে সুবিধা করে দেবে গেরুয়া দলকেই। ২০১৭ সালেও দেখা গিয়েছিল, এই ৫৮টি আসনের ৭ জন করে মুসলিম প্রার্থী লড়েছিলেন এসপি-কংগ্রেস জোট এবং বিএসপি-র পক্ষ থেকে। ফলে ওই সাতটি আসনেই জিতে যায় বিজেপি।
মিরাট, মিরাট দক্ষিণ, বুলন্দশহর, আলিগড়, কোলি, ধুলানার মতো মুসলিম অধ্যুষিত ৮টি আসনে যুগপৎ লড়বেন এসপি এবং বিএসপি-র মুসলিম প্রার্থীরা। ভোটের তারিখ ঘোষণার দু’দিনের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ পুরোপুরি ধর্মীয় মেরুকরণের পথে চলে গিয়ে বলেছিলেন, “উত্তরপ্রদেশের নির্বাচন এ বার ৮০ শতাংশ বনাম ২০ শতাংশের লড়াই। এসপি, কংগ্রেসের মতো বিরোধী দল এই ২০ শতাংশ ভোট পাওয়ার জন্য নিজেদের মধ্যে লড়াই করছে।’ উত্তরপ্রদেশের ২০ শতাংশ মুসলিম সম্প্রদায় যোগীর এই উক্তির পর ঐক্যবদ্ধ হয়ে এসপি-র ছাতার তলায় আসবে, এমনটাই ভেবে রেখেছেন অখিলেশ সিংহ যাদবের শিবির। কিন্তু পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে বিএসপি তথা মায়াবতীর যোগাযোগ
বরাবরই ভাল। সতেরোর ভোটে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের প্রথম দুটি
দফায় বিএসপি মুসলিমদের ভাল সমর্থন পেয়েছিল।
রাজনৈতিক শিবিরের মতে, সে বারের লড়াইয়ে মায়াবতীর উপর বিজেপির কোনও বাড়তি চাপ ছিল না। কিন্তু বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে মায়াবতী ক্রমাগত এসপি তথা অখিলেশকেই আক্রমণ করে
যাচ্ছেন। তাঁর পরিবারের উপর ঝুলছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার খাঁড়া। উনিশের লোকসভা ভোটের পর থেকে তিনি বিজেপি প্রশ্নে এতটাই মৌন থেকেছেন যে তাঁকে বিজেপির
‘বি’ দল হিসাবেও দাগিয়ে গিয়েছে অন্য বিরোধীরা।
সব মিলিয়ে এ বারের ভোটের প্রথম দফাতেই বিরোধী ভোট বিভাজন ঘটে কি না, সে দিকে সাগ্রহে নজর রাখছে বিজেপি।