পাকিস্তানের প্রস্তাব খারিজ রাষ্টপুঞ্জে। ছবি: এপি
আঙ্গারা আপ্পাজি, বাড়ি অন্ধ্রপ্রদেশ। গোবিন্দ পট্টনায়ক, আদি নিবাস ওড়িশা। কর্মসূত্রে দু’জনেই ছিলেন আফগানিস্তানে। গত কাল তাঁদের নাম রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষিদ্ধ জঙ্গিদের তালিকায় তোলার জন্য নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব এনে ব্যর্থ হল পাকিস্তান। আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি এবং বেলজিয়াম একজোট হয়ে সেই প্রস্তাব আটকে দিল। তাদের যুক্তি, এই দু’জনের জঙ্গি-যোগের কোনও প্রমাণই দিতে পারেনি ইসলামাবাদ।
নিরাপত্তা পরিষদের ১২৬৭তম প্রস্তাব মেনে তালিবান ও আল কায়দা জঙ্গিদের উপরে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা ও নজরদারির উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছিল ‘১২৬৭ সাব-কমিটি’। এই কমিটিই গত বছর জইশ-ই-মহম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারকে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী’ ঘোষণা করে। ভারতের লাগাতার চেষ্টাতেই তা সম্ভব হয়েছিল। কূটনীতিকদের মতে, মাসুদের নাম তোলার পাল্টা হিসেবে গত বছরে পাকিস্তানও চার জন ভারতীয়ের নাম জঙ্গি-তালিকায় তোলার তোড়জোড় শুরু করে। আপ্পাজি ও পট্টনায়ক বাদে অন্য দু’জনের নাম অজয় মিস্ত্রি ও বেণুমাধব ডোঙ্গরা। এঁরাও আফগানিস্তানে কাজ করতেন। সূত্রের বক্তব্য, অজয় ও বেণুমাধবের নাম জঙ্গি-তালিকায় তোলার প্রস্তাব জুন-জুলাই নাগাদই খারিজ করে দিয়েছিল কমিটি।
রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের স্থায়ী দূত টি এস তিরুমূর্তি টুইটারে লিখেছেন, ‘‘সন্ত্রাস বিষয়ক ১২৬৭ (কমিটির) কার্যপদ্ধতিতে রাজনৈতিক রং দিয়ে তাকে নির্লজ্জ ভাবে ব্যবহার করতে চেয়েছিল পাকিস্তান। নিরাপত্তা পরিষদের যে সদস্যেরা এই অপচেষ্টা রুখেছেন, তাঁদের ধন্যবাদ।’’
আরও পড়ুন: কুলভূষণের জন্য আইনজীবী নিয়োগে ভারতকে সুযোগ দিতে হবে, নির্দেশ পাক আদালতের
সূত্রের মতে, আপ্পাজি কাজ করতেন আফগানিস্তানের একটি ব্যাঙ্কে। পট্টনায়ক সেই দেশে একটি সংস্থার উচ্চ পদে ছিলেন। পাকিস্তানের অভিযোগ, আফগানিস্তানে কাজের আড়ালে এঁরা তেহরিক-ই-তালিবানের মতো জঙ্গি গোষ্ঠীকে আর্থিক ও অন্যান্য মদত জোগাতেন। এমনকি পেশোয়ারের স্কুলে জঙ্গি হামলার ঘটনাতেও তাঁদের নাম জড়ানো হয়েছিল। কিন্তু অকাট্য প্রমাণ ছাড়া কোনও পদক্ষেপ করতে চায়নি রাষ্ট্রপুঞ্জের কমিটি। পাকিস্তানকে প্রমাণ জোগাড় করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বৈঠক চাইলেন চিনা মন্ত্রী ॥ উত্তেজনার জন্য চিনই দায়ী: দিল্লি
ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তবও আজ অনলাইন সাংবাদিক বৈঠকে বিষয়টি তোলেন। চরবৃত্তির অভিযোগে পাকিস্তানে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রাক্তন ভারতীয় নৌ-অফিসার কূলভূষণ যাদবের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘কূটনৈতিক চ্যানেলে পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। কূলভূষণের নিরাপত্তার জন্য ভারত সরকার যাবতীয় পদক্ষেপ করছে।’’