ফাইল চিত্র।
গুজরাত পুলিশের জঙ্গি দমন শাখা (এটিএস)-এর হাতে গ্রেফতার হয়েছেন সমাজকর্মী তিস্তা শেতলবাদ। পুলিশের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তুলেছেন তিনি। সোমবার দিল্লিতে গ্রেফতার হয়েছেন সাংবাদিক মহম্মদ জ়ুবের। উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের বিভিন্ন উস্কানিমূলক বক্তৃতা লাগাতার সমাজমাধ্যমে তুলে আনা জ়ুবেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে ২০১৮ সালের একটি টুইটের জেরে। এ বার রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদের পাশাপাশি মহাসচিবের মুখপাত্রের তরফেও তিস্তা ও জ়ুবেরের গ্রেফতারি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। অবিলম্বে তিস্তা ও জ়ুবেরের মুক্তির দাবিও তোলা হয়েছে।
মানবাধিকার পরিষদ টুইটারে লিখেছে, ‘তিস্তা শেতলবাদকে আটক ও গ্রেফতার করার ঘটনায় আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। অবিলম্বে তাঁর মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। আন্দোলন করা এবং ২০০২-এর গুজরাত দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকার জন্য কাউকে শাস্তি দেওয়া চলে না।’ অন্য দিকে, জ়ুবের প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতারেসের মুখপাত্র বলেছেন, ‘এক জন সাংবাদিক কী লিখছেন, বলছেন বা টুইট করছেন, তার জন্য তাঁকে জেলে বন্দি করা যায় না।’ বাক্স্বাধীনতার প্রসঙ্গও তুলেছেন তিনি। তিস্তা এবং জ়ুবেরের গ্রেফতারিকে ‘ভয়ানক ঘটনা’ বলেছেন নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী ফিলিপিন্সের সাংবাদিক মারিয়া রেসা। তাঁর কথায়, ‘‘এ নিয়ে প্রত্যেকের কথা বলা উচিত, লেখা উচিত। বিষয়টি ভয়ানক এবং তা আরও বেশি করে খবরের শিরোনাম হওয়া উচিত।’’
সাম্প্রতিক অতীতে যত বারই আন্তর্জাতিক মহল থেকে ভারতের মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, তীব্র প্রতিক্রিয়া দিতে দেখা গিয়েছে নয়াদিল্লিকে। এ বারও তার অন্যথা হয়নি। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, তিস্তা শেতলবাদ এবং অন্যদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদের মন্তব্য তাঁরা শুনেছেন। বাগচীর কথায়, “এই ধরনের মন্তব্য সম্পূর্ণ অনভিপ্রেত এবং ভারতের স্বাধীন বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থার মধ্যে নাক গলানোর শামিল। দেশের বর্তমান বিচার প্রক্রিয়াঅনুযায়ী ভারতের সরকার আইন-খেলাফির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। এই ধরনের আইনি পদক্ষেপকে আন্দোলন-দমন হিসেবে দাগিয়ে দেওয়া একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। এর ফলে আসলে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়।”