ফাইল চিত্র।
রাশিয়া নিয়ে আবার আন্তর্জাতিক পরীক্ষার সামনে ভারত। মূল প্রশ্নপত্রটি মিলবে বৃহস্পতিবার। পরীক্ষক, রাষ্ট্রপুঞ্জ।
নিউ ইয়র্ক পৌঁছে গিয়েছেন বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশন এবং নিরাপত্তা পরিষদে ইউক্রেনের মানবাধিকার পরিস্থিতি সংক্রান্ত খসড়া প্রস্তাবে বৃহস্পতিবার ভোটাভুটি হওয়ার কথা। পাশাপাশি বুধবার রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ এবং আরব দেশগুলির মধ্যে বৈঠকেও উপস্থিত ছিলেন বিদেশসচিব।
বৈঠকটির পরে বিদেশসচিব শ্রিংলা এ দিন বলেন, “পশ্চিম এশিয়ায় শান্তি স্থাপনের ক্ষেত্রে আরব দেশগুলির সঙ্গে রাষ্ট্রপুঞ্জের আলোচনার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারত এ
কাজে সব রকম সহযোগিতায় প্রস্তুত।” রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের স্থায়ী মিশনের প্রতিনিধি টি এস তিরুমূর্তি টুইট করে বিদেশসচিবকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে ভারতীয় মিশন বিলক্ষণ টের পাচ্ছে, রাশিয়াকে কেন্দ্র করে নয়াদিল্লির উপর তৈরি হওয়া চাপের বহর।
এর আগে দু’বার রাষ্ট্রপুঞ্জে রাশিয়া-ইউক্রেন নিয়ে ভোটাভুটি হয়েছে। দু’বারই ভারত ভোটদানে বিরত থেকেছে। বিরত থাকায় ব্যাখ্যা হিসাবে নয়াদিল্লি যা বলেছে তাতে সন্ত্রাসের, হিংসার বিরুদ্ধে নিন্দা থাকলেও মস্কো বা ভ্লাদিমির পুতিন প্রশাসনের নাম করে কোনও নিন্দা বা সমালোচনা কিন্তু ছিল না।
বিষয়টি ভাল চোখে দেখছে না আমেরিকা এবং পশ্চিম বিশ্ব। তারই মধ্যে, যুদ্ধ চলাকালীনই রাশিয়া থেকে কম দামে অশোধিত তেল কিনেছে ভারত। বিষয়টি ‘ইতিহাসে থেকে যাবে’ বলে মন্তব্য করেছে ওয়াশিংটন। শুধু তাই-ই নয়, গত কালই
কোনও রাখঢাক না করে
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, চতুর্দেশীয় অক্ষ কোয়াডে চিড় ধরেছে। জাপান, আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়া সম্মিলিত ভাবে রাশিয়ার আগ্রাসনের মোকাবিলায় কঠোর অবস্থান নিলেও ভারত ‘কোনও কারণে নড়বড়ে।’
আগামী মাসে আমেরিকার সঙ্গে ভারতের ‘টু প্লাস টু’ (বিদেশমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী) পর্যায়ের বৈঠক। চিন প্রশ্নে কোয়াডের উপর ভারতের নির্ভরশীলতা প্রবল। ফলে এক দিকে রাশিয়ার সঙ্গে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বিপুল নির্ভরতা, অন্য দিকে আমেরিকা তথা কোয়াডের সঙ্গে আঞ্চলিক নিরাপত্তার প্রশ্নে নির্ভরতা— এই দুইয়ের মধ্যে পড়ে এ বারের নিরাপত্তা পরিষদের ভোটাভুটিতে একটি পক্ষ অবলম্বন করতে হবে ভারতকে, মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।
ষাটটিরও বেশি দেশের সমর্থনে যে প্রস্তাবের খসড়াটি আনছে ফ্রান্স এবং মেক্সিকো যৌথ ভাবে, সেখানে স্পষ্ট ভাবে রাশিয়াকে আক্রমণ বন্ধ করতে বলার কথা রয়েছে। পাশাপাশি ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলায় ভয়াবহ মানবিক পরিণতির কথা বলে মস্কোর নিন্দা করা হয়েছে। এ ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকাও একটি খসড়া প্রস্তাব আনছে যেখানে রাশিয়ার নাম উল্লেখ করা হয়নি। শুধুমাত্র অবিলম্বে হিংসা বন্ধ করার ডাক দেওয়া হয়েছে। এই খসড়ায় সব পক্ষকে রাজনৈতিক আলোচনা, দর কষাকষি মধ্যস্থতা করা এবং শান্তিপূর্ণ ভাবে সঙ্কট নিরসনের কথা বলা হয়েছে।