প্রতীকী ছবি।
এক দিকে পাকিস্তানকে নিশানা করে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা বলা। অন্য দিকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দেওয়া। সব মিলিয়ে শুক্রবার ভারত এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির শীর্ষ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক (ভিডিয়ো মাধ্যমে) অত্যন্ত সফল বলেই দাবি করছে বিদেশ মন্ত্রক। বৈঠকের পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দাবি, দু’দেশের আর্থিক সম্পর্কে নতুন যুগের সূচনা হল।
সংযুক্ত আরব আমিরশাহির যুবরাজ শেখ মহম্মদ বিন জায়েদ আল নাহানের সঙ্গে শুক্রবার ভিডিয়ো বৈঠকে মিলিত হন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার ঠিক আগে দু’দেশের মধ্যে সই হল ‘কম্প্রিহেনসিভ ইকনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট’ (সিইপিএ)। সাউথ ব্লকের দাবি, এর ফলে শুধু মাত্র দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক এবং বাণিজ্যিক সংযোগই বাড়ল না, আবু ধাবির সঙ্গে নয়াদিল্লির কৌশলগত সম্পর্কেরও উত্তরণ ঘটল।
কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী আজ টুইট করে বলেন, “দু’টি দেশই অর্থনৈতিক সহযোগিতার এক স্বর্ণযুগে প্রবেশ করল।” এই চুক্তি নিয়ে কথা শুরু হয়েছিল গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে। সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এই মুহূর্তে ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। আজকের চুক্তির পরে শক্তি, পর্যটন, স্বাস্থ্য পরিষেবার মতো ক্ষেত্রে ভারতে আবু ধাবির বিনিয়োগ অনেক গুণ বেড়ে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। মোদীর কথায়, “সিইপিএ-র মতো গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি আমরা মাত্র চার মাস কথা বলেই সই করতে পারলাম। এই ধরনের সমঝোতা হতে বছরের পর বছর লেগে যায়।”
বৈঠকের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কোভিডের মধ্যে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও আমাদের বন্ধুত্ব প্রতিনিয়ত এক নতুন মাত্রা পাচ্ছে। ভারত এবং আবু ধাবির এই দ্বিপক্ষিক সম্পর্কে আপনার ব্যক্তিগত ভূমিকা অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য।” যুবরাজকে উদ্দেশ করে মোদীর বক্তব্য, “অতিমারির বিপদের মধ্যেও আপনি যে ভাবে ভারতীয় বংশোদ্ভূত সম্প্রদায়ের খেয়াল রেখেছেন, তাতে আমি কৃতজ্ঞ।” সে দেশে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসবাদী হামলার কড়া নিন্দা করে মোদীর বক্তব্য, “সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করব।” জম্মু ও কাশ্মীরে আবু ধাবির বিনিয়োগের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, আজকের বৈঠকের পরে দু’টি দেশ গোটা অঞ্চলে
শান্তি এবং সংহতির জন্য সমুদ্রক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াবে। পাশাপাশি আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক চরমপন্থা এবং আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়তে দু’টি দেশের মধ্যে সহযোগিতাও বাড়বে।
বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, সিইপিএ-র ফলে আগামী পাঁচ বছরে দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য ৬ হাজার কোটি ডলার থেকে বেড়ে ১০ হাজার কোটি ডলারে দাঁড়াবে। ভারতীয় সংস্থাগুলির বিনিয়োগের সম্ভাবনা বাড়াতে আবু ধাবিতে একটি বিশেষ বাণিজ্যিক উচ্চপ্রযুক্তি অঞ্চল তৈরি করা হবে। সেখানে পরিষেবা, ওষুধ শিল্প, কৃষি, কৃষি প্রযুক্তি, অ্যালুমিনিয়াম, চিকিৎসার যন্ত্র তৈরির দিকে নজর দেওয়া হবে।