রাজনাথ সিংহ। ফাইল চিত্র।
জোট ভাঙার পরে আগামিকাল প্রথম বার কাশ্মীর যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। উপত্যকায় যাওয়ার কথা রয়েছে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালেরও। সরকারি ভাবে ওই সফরে অমরনাথ যাত্রার সুরক্ষাব্যবস্থা খতিয়ে দেখার কথা দু’জনের। সূত্রের খবর, প্রশাসনিক নজরদারির পাশাপাশি তলে তলে সরকার গড়ার প্রক্রিয়া চালু রেখেছে বিজেপি। দলের একাংশের দাবি, বিভিন্ন দলের বিধায়কেরা বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছেন। অমরনাথ যাত্রা শেষ হলে সরকার গড়া নিয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ করতে পারে দল।
মেহবুবার সঙ্গে জোট ভাঙার পর থেকেই তলে তলে জম্মু-কাশ্মীরে সরকার গড়তে প্রবল ভাবে সক্রিয় রয়েছেন অমিত শাহেরা। এ ক্ষেত্রে দলের মুখ্যমন্ত্রী মুখ হলেন জম্মু-কাশ্মীর পিপলস্ কনফারেন্স দলের নেতা সাজ্জাদ লোন। জোট সরকার থেকে বেরিয়ে আসার পর থেকেই সাজ্জাদের সঙ্গে নিয়মিত ভাবে যোগাযোগ রেখে চলেছেন বিজেপি নেতা রাম মাধব। বিজেপির দাবি, গত কয়েক দশক ধরেই পরিবারতন্ত্রের শিকার জম্মু-কাশ্মীর। ক্ষমতা ঘোরাফেরা করছে আবদুল্লা বা মুফতি পরিবারের মধ্যেই। তাই বিজেপি চাইছে তৃতীয় শক্তি হিসেবে সাজ্জাদের মতো নেতাকে দাঁড় করিয়ে ওই রাজ্যে নিজেদের সরকার গড়তে। টানাপড়েনের মধ্যেই আজ দিল্লির রাজনৈতিক শিবিরে গুঞ্জন ছিল, কাশ্মীরে সরকার গড়ার প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করতে পারেন লোন। যদিও দুই শিবিরই বৈঠকের কথা অস্বীকার করেছে।
সাজ্জাদকে মুখ করে জম্মু-কাশ্মীরে সরকার গড়ার ক্ষেত্রে বিজেপির কাছে মূল সমস্যা হল, প্রয়োজনীয় বিধায়কের অভাব। ৮৭ সংখ্যার বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ৪৪টি আসন। এই মুহূর্তে ওই রাজ্যে বিজেপির আসন সংখ্যা হল ২৫। সাজ্জাদদের বিধায়ক সংখ্যা ২। অর্থাৎ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে বিজেপির প্রয়োজন অন্তত ১৭টি আসনের।
এই পরিস্থিতিতে বিজেপিকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে পিডিপি-তে হওয়া ভাঙনের পূর্বাভাস। ইতিমধ্যেই পিডিপি নেতা তথা বিধায়ক রাজা আনসারি মুখ খুলেছেন মেহবুবার নেতৃত্ব ও পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে। আনসারির দাবি, তাঁর সঙ্গে দলের অন্তত এক-তৃতীয়াংশ বিধায়কের সমর্থন রয়েছে। তাঁরা বিজেপিকে সমর্থন করতে প্রস্তুত। তবে অন্য রাজ্যে কোনও বিধায়ক দল-বিরোধী কাজ করছেন কি না তা স্থির করেন স্পিকার। কিন্তু জম্মু-কাশ্মীরে সে কথা বলার অধিকার সংশ্লিষ্ট সংসদীয় দলের নেতা বা নেত্রীর। ফলে দল ভাঙাতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে বিজেপির।
চুপ করে বসে নেই মেহবুবাও। গত শুক্রবার থেকেই দিল্লিতে বসে রয়েছেন তিনি। বৈঠক করেছেন একাধিক কংগ্রেস নেতার সঙ্গেও। তবে এই মুহূর্তে ওই রাজ্যে সরকার গড়ার কোনও ঝুঁকি যে রাহুল গাঁধী নিতে রাজি নন তা জানিয়ে কংগ্রেসের তরফে জানানো হয়েছে মেহবুবাকে।