প্রতীকী ছবি।
সঙ্ঘ পরিবারের স্বদেশি জাগরণ মঞ্চের ছাপ আরও স্পষ্ট হল নরেন্দ্র মোদী সরকারের বাজেটে।
মোদীর নোট বাতিলে সব থেকে বেশি ধাক্কা লেগেছিল ছোট-মাঝারি শিল্পে। বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে শুল্কের দেওয়াল তুলে এবং অ্যামাজনের মতো ই-কমার্স সংস্থার উপরে কর বসিয়ে সেই ছোট-মাঝারি শিল্পের মন জয়ের চেষ্টা করল কেন্দ্র। স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ, ছোট ব্যবসায়ীদের সংগঠন যেমন দাবি করছিল। ফলে দিল্লির ভোটেও ফায়দা মিলবে বলে বিজেপির আশা।
কিন্তু প্রশ্ন উঠল, কেন্দ্র কি মুক্ত বাণিজ্যের বদলে রক্ষণশীল নীতি বা ‘প্রোটেকশনিজম’-এর পথে হাঁটছে? পি চিদম্বরমের মতে, ‘‘বিজেপি সরকার রক্ষণশীল, নিয়ন্ত্রণের নীতির জন্য পরিচিত। বাজেটে সেই অবস্থান আরও মজবুত হয়েছে।’’ বাজেটের আগে সরকারের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যম খোলা বাজারের প্রয়োজনের কথা বলেছিলেন। চিদম্বরম বলেন, ‘‘উনি নিশ্চয় হতাশ।’’
স্বদেশি জাগরণ মঞ্চের নেতা অশ্বিনী মহাজন দাবি তুলেছিলেন, ই-কমার্স সংস্থাগুলির উপরে কর বসানো হোক। কারণ, তারা দেশীয় শিল্প থেকে ছোট ব্যবসায়ীদের ক্ষতি করছে। আজ বাজেটে ই-কমার্স সংস্থাগুলিতে টিডিএস বসানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী। ই-কমার্স পোর্টালে যে সব বিক্রেতা পণ্য বেচছেন, তাদের টাকা মেটানোর সময় ১% হারে টিডিএস কাটা হবে। প্যান-আধার না-থাকলে ৫% টিডিএস দিতে হবে। তবে কোনও ব্যক্তির উপরে কর চাপবে না। অনলাইনে কেনাকাটার উপরেও কর বসবে না। ই-কমার্সে শুধু পণ্য নয়, পরিষেবাও পড়ে। ফলে ওলা, উবর, সুইগি-র মতো সংস্থাতেও এই টিডিএস চালু হতে পারে।
বিদেশ থেকে সস্তার পণ্য দেশের বাজারে ঢোকা বন্ধ করতে কেন্দ্র আজ চটি-জুতো, আসবাব, খেলনা থেকে বৈদ্যুতিক গাড়ি, মোবাইলের প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ডের মতো আমদানি শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মোবাইলের ভাইব্রেটর, রিঙ্গার, ডিসপ্লে প্যানেল থেকে রান্নার সামগ্রী, ফ্যান, ফুড গ্রাইন্ডার-মিক্সার, ওয়াটার হিটার, হেয়ার ড্রায়ার, কুকার, টোস্টারের মতো বৈদ্যুতিন সামগ্রী আমদানিতেও আমদানি শুল্ক বাড়ানো হয়েছে।
কিছু দিন আগেই ১৬ দেশের প্রস্তাবিত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি আরসেপ থেকে কেন্দ্র সরে এসেছে। নির্মলার যুক্তি, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে আমদানি বাড়ার ফলে দেশীয় শিল্পে বিপদ তৈরি হয়েছে। সে কারণে আমদানি শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে। চিকিৎসা সংক্রান্ত যন্ত্রাংশের আমদানি শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে ব্যবসায়ী সংগঠন সিএআইটি-র মহাসচিব প্রবীণ খাণ্ডেলওয়াল বলেন, ‘‘সস্তার পণ্য ভরানোর জায়গা ভারত নয়।’’