গুজরাত ভোটের পরেই বিজেপি সাংসদ কিরোড়ীলাল মীনা রাজ্যসভায় ‘প্রাইভেট মেম্বার’স বিল’ হিসেবে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল পেশ করেছেন। ফাইল চিত্র।
গুজরাত-হিমাচল, তার আগে উত্তরাখণ্ড বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপি অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সরকারি কমিটি গঠন করেছে। গুজরাত ভোটের পরেই বিজেপি সাংসদ কিরোড়ীলাল মীনা রাজ্যসভায় ‘প্রাইভেট মেম্বার’স বিল’ হিসাবে যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল পেশ করেছেন, তাতেও একই ভাবে শুধু মাত্র সরকারি কমিটি গঠন করার কথাই বলা হয়েছে। অভিন্ন দেওয়ানি বিধির খসড়া কেমন হবে, তাতে কী থাকবে, তার কোনও দিশা বিলে নেই।
বিলে শুধু বলা হয়েছে, কেন্দ্র ছয় মাসের মধ্যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি তৈরি ও তার রূপায়ণের জন্য একটি কমিটি তৈরি করবে। সেই জাতীয় কমিটির চেয়ারপার্সন হবেন একজন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় সরকার মনোনীত দু’জন হাই কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি, এক জন আইনি বিশেষজ্ঞ কমিটিতে থাকবেন। এ ছাড়া এক জন আইএএস অফিসারকে সচিব হিসেবে নিয়োগ করা হবে।
সংবিধানে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির ভাবনায় বলা আছে, বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ, দত্তক, উত্তরাধিকার, জমি-সম্পত্তির ভাগাভাগির ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধর্মের ও জনজাতির মানুষের মধ্যে নিজস্ব আইনের বদলে সকলের জন্য একই আইন চালু হবে। গুজরাত ভোটের পরেই বিরোধীদের আপত্তি সত্ত্বেও রাজ্যসভায় বিজেপি সাংসদ কিরোড়ীলাল মীনা ‘প্রাইভেট মেম্বার’স বিল’ হিসেবে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল পেশ করেন। অসরকারি বিল হলেও সংসদে পাশ হলে তা সরকারি বিলে পরিণত হতে পারে। তা ছাড়া সংসদে আলোচনা হলে বিতর্কও হবে। তার পরেই বিলে কী রয়েছে, তা নিয়ে বিরোধী সাংসদেরা উৎসুক হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু বিল খুলে দেখেন, কমিটি গঠনের কথা ছাড়া আর কিছু নেই। বিরোধীদের অভিযোগ, বিজেপি আসলে এ নিয়ে বিতর্ক উস্কে দিয়ে মেরুকরণ করতে চাইছে। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করতে গিয়ে ভোটে নিজেদের হাত পুড়তে পারে কি না, তা বোঝার জন্য জল মেপে নিতে চাইছে।
রামমন্দির নির্মাণ, জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের মতোই দেশ জুড়ে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করা বিজেপি-আরএসএসের দীর্ঘ দিনের লক্ষ্য। গত লোকসভা নির্বাচনের ইস্তাহারেও বিজেপি অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু সরকারি ভাবে মোদী সরকারের বরাবরের অবস্থান হল, অভিন্ন দেওয়ানি বিধির ক্ষেত্রে অন্তত ঐকমত্যের ভিত্তিতে পদক্ষেপ করা। রাজ্য স্তরে ভোটমুখী কিছু বিজেপি সরকার এ ব্যাপারে এগোলেও জাতীয় স্তরে সরকারি ভাবে তাই কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।