ছবি: পিটিআই।
কেউ বললেন, চাকরি পাননি বলেই বেছে নিয়েছিলেন পশুপালনের ব্যবসা। কেউ জানালেন, জীবিকা হিসেবে মাছ-চাষের হাত ধরা আসলে কৃষিতে আয় কম হওয়ার কারণেই। যা শুনে বিরোধীদের কটাক্ষ, উজ্জ্বল বিহার তথা আত্মনির্ভরতার দিকে পা বাড়ানো ভারতের ছবি তুলে ধরতে নরেন্দ্র মোদী সরকারের এমন ‘সাজানো-গোছানো চিত্রনাট্যেও’ ফাঁক রয়ে গেল!
বৃহস্পতিবার মৎস্য সম্পদ প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দিল্লি থেকেই বিহারের বিভিন্ন প্রান্তের কয়েক জনের সঙ্গে ভিডিয়ো-আলাপচারিতা সারলেন প্রধানমন্ত্রী। এঁদের কেউ পশুপালনে যুক্ত, তো কেউ মাছ-চাষে। স্বাভাবিক ভাবেই সরকারি অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের ভূয়সী প্রশংসা করলেন তাঁরা। আর তাঁদের উদাহরণ তুলে ধরে মোদীও দেখানোর চেষ্টা করলেন, কী ভাবে পড়াশোনা শেষের পরে শুধু চাকরি না-খুঁজে, নিজে ব্যবসা করেও পায়ের তলায় মাটি পাওয়ার চেষ্টা করছেন অনেকে। কী ভাবে রোপিত হচ্ছে আত্মনির্ভর ভারতের বীজ। যাঁদের সঙ্গে কথা হল, কৃষি, মাছ-চাষ, পশুপালনকে ভালবেসেই তা করার কথা বললেন তাঁরা। কিন্তু তারই মধ্যে সামান্য হলেও অস্বস্তিতে পড়তে হল প্রধানমন্ত্রীকে।
যেমন, পূর্ণিয়ার মনিকা ভারতী হাঁসদাকে মোদীর প্রশ্ন ছিল, “স্নাতক হওয়ার পরে পশুপালনের মাধ্যমে দুধের ব্যবসায় কেন?” এই পেশাকে ভালবেসে ফেলা মনিকাও বলেছেন, পড়াশোনা শেষে চাকরি খুঁজে মেলেনি। তাই এই ব্যবসায় পা রেখেছিলেন। মাছ-চাষে মন দেওয়া মাধেপুরার জ্যোতি মণ্ডল এবং ঠেলাগাড়িতে মাছ বিক্রি করে সংসার চালানো পটনার রাজু কুমার প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, চাষবাসে তেমন আয় হচ্ছিল না। সেই কারণেই পেশা বদল। এঁদের মধ্যে জ্যোতি জেএনইউ থেকে স্নাতকোত্তর।
বিরোধী শিবিরের প্রশ্ন, চাকরির বাজার কতখানি অন্ধকার, তা আর কবে স্বীকার করবে মোদী সরকার? কত দিন তাকে চাপা দেবে আত্মনির্ভরতার মোড়কে? চাষিদের আয় দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া প্রধানমন্ত্রীকে কেন কৃষিতে আয় না-থাকার কথা শুনতে হল, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা। যদিও একই অনুষ্ঠানে কৃষিকাজ ও পশুপালনে যুক্ত বারাউনির ব্রজেশ কুমারের দাবি, প্রযুক্তি নিয়ে অনেকটা পড়াশোনার পরেও স্বেচ্ছায় ও গর্বের সঙ্গে এই পেশায় এসেছেন তিনি।