Terrorism in Jammu and Kashmir

ডিসেম্বর থেকে চোরাগোপ্তা পথে জঙ্গিদের প্রবেশ! দিল্লির চিন্তা মগজধোলাই হওয়া কাশ্মীরি তরুণদের নিয়েও

গন্ডেরবালের হামলায় দু’জন জঙ্গি জড়িত ছিল। তাদের মধ্যে এক জনকে ইতিমধ্যে চিহ্নিত করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। ওই জঙ্গি কাশ্মীরেরই বাসিন্দা। অপর জন নিয়ন্ত্রণরেখা পার করে কাশ্মীরে অনুপ্রবেশ করেছিল বলে অনুমান।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:৫৪
Share:

কাশ্মীরের রাস্তায় নিরাপত্তাবাহিনীর টহলদারি। ছবি: পিটিআই।

কাশ্মীর উপত্যকায় সম্প্রতি একের পর এক জঙ্গি হানা। কখনও নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের উপর হামলা। কখনও সেনার উপর। পর পর ঘটনাগুলি উদ্বেগ বৃদ্ধি করেছে দিল্লির। এরই মধ্যে উঠে আসছে, নিয়ন্ত্রণরেখার ও পার থেকে জঙ্গি অনুপ্রবেশের তত্ত্বও। পাকিস্তান থেকে অনুপ্রবেশ রুখতে নিয়ন্ত্রণরেখায় কড়া নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনীর নজর এড়িয়েও কি কাশ্মীরে প্রবেশ করে যাচ্ছে জঙ্গিরা? সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ে উল্লেখ, গত এক বছর ধরে এই ধরনের বেশ কিছু অনুপ্রবেশ হয়ে থাকতে পারে বলে অনুমান। পাশাপাশি কাশ্মীরের স্থানীয় তরুণদের মগজধোলাই করে কাউকে কাউকে জঙ্গি সংগঠনে যুক্ত করা হয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

Advertisement

এই সন্দেহ আরও বৃদ্ধি করেছে গন্ডেরবালে সাম্প্রতিক জঙ্গি হানা। জঙ্গিদের অতর্কিত হানায় সাত জন নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। পিটিআই সূত্রে খবর, হামলা চালিয়েছিল দু’জন জঙ্গি। প্রায় ১০ মিনিট ধরে নাগাড়ে গুলি চালিয়েছিল তারা। পরে জঙ্গলের ভিতর পালিয়ে গিয়েছিল। তাদের মধ্যে এক জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সে কাশ্মীর উপত্যকারই স্থানীয় তরুণ। দক্ষিণ কাশ্মীরের কুলগাম জেলার বাসিন্দা। ২০২৩ সালেই ওই তরুণকে মগজধোলাই করিয়ে জঙ্গি সংগঠনে যুক্ত করানো হয়েছিল বলে গোয়েন্দা সূত্রে খবর। অনুমান করা হচ্ছে অপর জঙ্গি পাকিস্তান থেকে এ দেশে প্রবেশ করেছিল। কাশ্মীরি তরুণের হাতে ছিল একে ৪৭। অপর জঙ্গির হাতে ছিল আমেরিকার এম-৪ রাইফেল।

উপত্যকায় স্থানীয় তরুণদের একাংশের মধ্যে যে ভাবে দ্রুত গতিতে কট্টরপন্থার বীজ বপনের চেষ্টা চলছে, তাতে উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে দিল্লির। পিটিআইয়ে উল্লেখ, কাশ্মীরের স্থানীয় জঙ্গিরা অন্য গোষ্ঠীর জঙ্গিদের অনুপ্রবেশে সাহায্য করে থাকতে পারে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, চলতি বছরের মার্চেই তুলাইল সেক্টরে নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করে বেশ কয়েকজন জঙ্গি কাশ্মীরে প্রবেশ করেছিল। শুধু তা-ই নয়, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে তুলাইল, গুরেজ়, মাচিল এবং গুলমার্গ হয়ে একাধিক অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে বলে গোয়েন্দা সূত্রের খবর।

Advertisement

সে ক্ষেত্রে কাশ্মীর উপত্যকায় স্থানীয় তরুণেরা যাতে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত না হতে পারে, তা নিশ্চিত করতে নজরদারি বৃদ্ধি করেছে কাশ্মীর পুলিশ এবং ভারতীয় সেনা। তবে কাশ্মীরে জঙ্গি কার্যকলাপ রুখতে নিরাপত্তা বাহিনীর একটি অন্যতম চ্যালেঞ্জ হল ‘সুপ্ত আতঙ্ক’। জঙ্গিরা এক বার অনুপ্রবেশ করলে, প্রথমে তারা সাধারণ মানুষের ভিড়ে মিশে থাকে। ‘লো প্রোফাইল’ হয়ে থাকে। অর্থাৎ কোনও গতিবিধি নেই। একে বারে শান্ত। লোকালয়ের মধ্যেই কোথাও একটা গা ঢাকা দিয়ে থাকে। যত ক্ষণ না পাকিস্তানে বসে থাকা জঙ্গি গোষ্ঠীর উপরতলা নেতাদের থেকে কোনও নির্দেশ আসছে।

সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে। প্রায় এক দশক পর বিধানসভা ভোট হয়েছে। তার আগে কাশ্মীরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও আঁটসাট করা হয়েছিল। সম্ভবত সেই কারণেই এতদিন জঙ্গিরাও চুপচাপ ছিল। ভোট মিটতেই আবার জঙ্গি কার্যকলাপ শুরু হয়েছিল। পাশাপাশি অনলাইনে কাশ্মীরি তরুণদের মগজধোলাইয়ের চেষ্টাও চিন্তায় রাখছে নিরাপত্তাবাহিনীকে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার ফলে এখন জঙ্গি সংগঠনে নতুন নিয়োগের জন্য সরাসরি যোগাযোগ করা বেশ কঠিন হয়ে উঠেছে। এই অবস্থায় তাই সরাসরি যোগাযোগের বদলে, সমাজমাধ্যমগুলিকে ব্যবহার করছে তারা। পরিচয় গোপন রাখতে ব্যবহার করা হচ্ছে ভুয়ো প্রোফাইল। ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন)-ও ব্যবহার করা হচ্ছে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, টেলিগ্রাম এবং ম্যাস্টোডনের মতে সমাজমাধ্যমগুলিকে ব্যবহার করছে জঙ্গিরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement