ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লা। —ফাইল চিত্র।
জম্মু ও কাশ্মীরে সম্প্রতি একের পর এক জঙ্গি নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। সেনার গাড়ির উপর হামলা হয়েছে। রেহাই পাননি নিরস্ত্র সাধারণ মানুষেরাও। শ্রমিক, চিকিৎসকদেরও গুলি করে হত্যা করেছে জঙ্গিরা। সাম্প্রতিক এই ঘটনাগুলির জন্য এ বার ইসলামাবাদকে বিঁধলেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লা। তাঁর সংশয়, দেশভাগের সময় কাশ্মীর পাকিস্তানের সঙ্গে যোগ না দেওয়ারই ‘বদলা’ নিচ্ছে ইসলামাবাদ। জম্মু ও কাশ্মীরের তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী ফারুকের কথায়, “পাকিস্তান যদি এ সব চালাতে থাকে, তা হলে এক দিন যুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে। সে দিন আর কোনও কিছুকেই রেয়াত করা হবে না।”
উপত্যকায় জঙ্গি কার্যকলাপের জন্য পাকিস্তানকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। এই জঙ্গি কার্যকলাপের জন্যই জম্মু ও কাশ্মীর ধীরে ধীরে ‘ধ্বংস’ হয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন তিনি। ফারুকের প্রশ্ন, “পাকিস্তান কি এ সব দেখে না? তারা কি তাদের সঙ্গে যোগ না দেওয়ায় আমাদের উপর বদলা নিতে চায়? এ সব আর কত দিন চলবে?” পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়া বন্ধ করার জন্যও বলেন ফারুক। ইসলামাবাদকে বিঁধে তাঁর মন্তব্য, “ওরা চাইছে জঙ্গি কার্যকলাপ চালিয়ে কাশ্মীরকে পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত করবে। তারা মূর্খের স্বর্গে বাস করছে। ১৯৪৭ সালেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কাশ্মীর।”
কাশ্মীরে সাম্প্রতিক একের পর এক জঙ্গি কার্যকলাপের ঘটনায় কয়েক দিন আগেও সরব হয়েছিলেন তিনি। চলতি সপ্তাহে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার পাকিস্তানকে বিঁধে মন্তব্য ফারুকের। গত রবিবার সোনমার্গের কাছে জঙ্গি হানায় ছ’জন শ্রমিক এবং এক চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছিল। ওই ঘটনার পরও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, “কাশ্মীর কখনও পাকিস্তান হয়ে যাবে না। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করতে চাইলে অবিলম্বে পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়া বন্ধ করা উচিত।” ইসলামাবাদ সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়া বন্ধ না করলে, তার ‘পরিণাম’ মারাত্মক হবে বলেও পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি।
সোনমার্গে হামলার দায় স্বীকার করেছিল ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ) নামে এক জঙ্গিগোষ্ঠী। পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবা থেকে এই সংগঠনের জন্ম। রবিবারের ঘটনার পরেও কাশ্মীরে একাধিক জায়গায় জঙ্গিরা হানা দিয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার পুলওয়ামায় এক সাধারণ নাগরিককে গুলি করে হত্যা করেছে জঙ্গিরা। সেই দিনেই গুলমার্গে সেনার গাড়িতেও হামলা হয়েছিল। জঙ্গিদের গুলিতে মৃত্যু হয় দুই জওয়ান এবং নিরাপত্তাবাহিনীর দুই মালবাহকের। এই আবহেই চলতি সপ্তাহে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন ফারুক-পুত্র তথা জন্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা।