প্রতীকী ছবি।
আগামী নভেম্বরে অনিশ্চিত ভারত-রাশিয়া বার্ষিক দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ বৈঠক। কূটনৈতিক শীর্ষ সূত্রে এই খবর পাওয়া গিয়েছে।
ভারত এবং রাশিয়ার মধ্যে প্রত্যেক বছরের শেষে এই বৈঠকটির কূটনৈতিক ঐতিহ্য রয়েছে। গত বছর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এসেছিলেন ভারত সফরে। নিয়মমতো আগামী নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর যাওয়ার কথা রয়েছেমস্কোয়। সূত্রের খবর, সমরখন্দে সদ্যসমাপ্ত এসসিও সম্মেলনের পার্শ্ববৈঠকে নয়াদিল্লির তরফে মস্কোকে জানানো হয়েছে, সেপ্টেম্বরেই মোদী-পুতিন শীর্ষ বৈঠকটি হয়ে গেল। তাই দেড় মাসের মধ্যেই আবার বসার প্রয়োজন নেই। তবে বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে মুখ খোলেনি বিদেশ মন্ত্রক। সরকারি ভাবে কিছুজানানোও হয়নি।
আমেরিকা তথা পশ্চিম বিশ্বের যাবতীয় চাপ সত্ত্বেও রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে রাশিয়া-বিরোধী ভোটাভুটিতে যোগ দেয়নি ভারত। এমনকি, মস্কো নিয়ে কোনও নিন্দামূলক বক্তব্যও রাষ্ট্রপুঞ্জে পেশ করতে দেখা যায়নি নয়াদিল্লিকে। তবে বারবার হিংসা বন্ধ করে দ্রুত আলোচনা এবং কূটনৈতিক পথে ফিরতে বলে গিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক। প্রধানমন্ত্রী মাঝে চারবার ফোনে কথা বলেছেন পুতিনের সঙ্গে। সাম্প্রতিক এসসিও-র পার্শ্ববৈঠকে পুতিনের মুখের উপরেই মোদী জানিয়ে দেন, ‘এই যুগটা যুদ্ধের নয়’। পাশাপাশি খাদ্য, শক্তি এবং সারের সঙ্কট সমাধানের জন্য তিনি আহ্বান জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্টকে।
তার পরেই মোদীর রাশিয়ায় না যাওয়ার সিদ্ধান্ত (এখনও পর্যন্ত) ভারত সরকারের ভারসাম্যের নীতিরই অঙ্গ বলেই মনে করা হচ্ছে। চিনের মতো একতরফা ভাবে পাশে না থাকলেও প্রবল চাপ অগ্রাহ্য করে রাশিয়া থেকে অশোধিত তেল আমদানি করে চলেছে ভারত। জি-৭-এর চোখরাঙানি সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত পিছিয়ে আসতে দেখা যায়নি সাউথ ব্লককে। পাশাপাশি, রাষ্ট্রপুঞ্জেও বারবার আমেরিকা ও ইউরোপের অনুরোধ অগ্রাহ্য করে রাশিয়া-বিরোধী ভোট দেওয়া হয়নি। তাই এ বার রাশিয়ার বিরুদ্ধে কিছুটা কড়া বার্তা দেওয়ার কূটনৈতিক পুঁজি মোদীর কাছে রয়েছে, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
নভেম্বরে মোদীর রাশিয়া যাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তার পাশাপাশি পূর্ব ইউরোপ থেকে আরও একটি আমন্ত্রণ এসে পৌঁছেছে সাউথ ব্লকে। কাজ়াকস্তানে অক্টোবরের ১২ তারিখ আয়োজিত হবে দু’দিনের ‘সিকা’ (কনফিডেন্স বিল্ডিং মেজার্স অ্যান্ড ইন্টারঅ্যাকশন ইন এশিয়া) সম্মেলন। তবে প্রধানমন্ত্রী সেখানেও যাবেন কিনা, সে বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।