প্রতীকী ছবি।
রেলের বেহাল আর্থিক স্বাস্থ্য নিয়ে আশঙ্কা আরও বাড়ল।
চলতি আর্থিক বছরে প্রায় ১৫ লক্ষ অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মীর পেনশনের টাকা মেটানো নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। প্রায় ৫৩ হাজার কোটি টাকা ২০২০-২১ আর্থিক বছরে কী ভাবে মেটানো হবে, তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে রেলের অভ্যন্তরে।
লকডাউন পর্বে রেলের আয়ের ভাঁড়ার সে ভাবে ভরেনি। পণ্যবাহী ট্রেন চালু থাকলেও শিল্পক্ষেত্রে চাহিদা তলানিতে এসে ঠেকায় পণ্য পরিবহণ থেকে আয়ের ধার্য লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেকটাই পিছিয়ে রেল। সারা দেশে বেশির ভাগ যাত্রিবাহী ট্রেন চলছে না। লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধি পাওয়ায় একাধিক বার রেলকে অগ্রিম টিকিট বুকিংয়ের টাকা ফিরিয়ে দিতে হয়েছে। যাত্রিভাড়া ছাড়া বিজ্ঞাপন এবং অন্যান্য ক্ষেত্র থেকেও রেলের ভাঁড়ারে সে ভাবে টাকা আসেনি। ফলে রেলের ঘরে নগদ জমার পরিমাণ প্রতিদিনই কমেছে। এই অবস্থায় পেনশনের আর্থিক দায় হিসেবে প্রায় ৫৩ হাজার কোটি টাকা মেটাতে হলে রেলের কাছে পরিকাঠামো উন্নয়ন খাতে খরচ করার মতো টাকা থাকবে না বলে মনে করছেন কর্তারা। অথচ কেন্দ্রীয় বাজেটের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে রেলের ওই খাতে ১.০২ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করার কথা। সারা দেশে বেহাল অর্থনীতির মধ্যে পরিকাঠামো খাতে খরচ বাড়িয়ে আয়ের সম্ভাবনা তৈরিই ওই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য।
পরিস্থিতি সামাল দিতে চলতি আর্থিক বছরে পেনশন বাবদ খরচের টাকা মেটানোর জন্য অর্থ দফতরের দ্বারস্থ হয়েছে রেল বলে খবর। করোনা আবহে আর্থিক সঙ্কট আরও দীর্ঘ হলে প্রায় ১৩ লক্ষ কর্মীর বেতনের টাকা মেটানো নিয়ে শঙ্কা তৈরি হতে পারে বলে মত রেলের কর্মী ইউনিয়নগুলির। যদিও কর্মীদের বেতনের ভার এখনই নিতে না পারার কথা জানায়নি রেল, এমনই খবর। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইস্টার্ন রেলওয়ে মেন্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ বলেন, ‘‘কর্মীদের কথা না ভেবেই সরকার রেলের আয়ের ক্ষেত্রগুলিকে বেসরকারি হাতে তুলে দিচ্ছে। পরিচালনক্ষেত্রে সরকারের ভুল নীতির কারণে কর্মীদের ন্যায্য প্রাপ্য নিয়ে সঙ্কট তৈরি হচ্ছে।’’
ইস্টার্ন রেলওয়ে মেন্স কংগ্রেসের সভাপতি বিনোদ শর্মা বলেন, ‘‘পেনশনের অঙ্ক হিসেব করেই কর্মীদের বেতন থেকে টাকা কাটা হয়। সেই টাকা জোগাড়ের জন্য সমস্যায় পড়তে হচ্ছে কেন, সেটাই প্রশ্ন। বেসরকারিকরণের পথে রেলকে ঠেলে দেওয়াতেই বিপত্তি তৈরি হচ্ছে।’’