মণিপুরে সোমবার, ২১ অগস্ট থেকে বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রবিবার রাত পর্যন্তও রাজ্যপাল আনুষ্ঠানিক ভাবে অধিবেশনের কথা ঘোষণাই করলেন না! ফলে মেইতেইদের দাবি সত্তেও বসছে না বিশেষ অধিবেশন। রাজ্যপালের ভূমিকায় বাড়তে পারে জটিলতা। মন্ত্রিসভার সুপারিশের পরেও রাজ্যপালের বিধানসভা অধিবেশনের তারিখ ঘোষণা না করা ব্যতিক্রমী ঘটনা। যদিও মণিপুর সংঘর্ষ নিয়ে হতে চলা অধিবেশনে ২ কুকি মন্ত্রী- সহ ১০ বিধায়কের কেউই যোগ দেবেন না বলে আগেই জানিয়েছেন। তাই অধিবেশন হলেও একপেশেই হত। কংগ্রেসও রাজ্যপালের কাছে ১৭৪ (১) ধারার অধীনে বিশেষ অধিবেশনের জন্য আবেদন জানিয়েছিল। রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি তোলা কংগ্রেসের মতে বিশেষ অধিবেশনেই তা নিয়ে আলোচনা করা যেত। কংগ্রেস দলনেতা ও তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী ওক্রাম ইবোবি সিংহের মতে বিধানসভার অধিবেশন না বসলে রাজ্যে সাংবিধানিক সঙ্কট দেখা
দিতে পারে।
অন্য দিকে মণিপুরের ভাইরাল ভিডিয়োর দুই মহিলার করা মামলার জেরে সুপ্রিম কোর্ট মণিপুর সরকারকে নোটিস পাঠিয়েছে। ওই দুই মহিলা প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চের কাছে দাবি জানান, তাঁদের মতো অনেকেই সংঘর্ষে ভিটেহারা হয়েছেন। ন্যূনতম মানবাধিকার রক্ষিত হচ্ছে না, সংবিধানের ১৪, ১৯ ও ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ নাগাড়ে লঙ্ঘিত হচ্ছে, ভাল ভাবে বাঁচার কোনও আশা দেখছেন না তাঁরা। তাই তাঁরা সরকারকে এমন এক অনলাইন পোর্টাল খুলতে বলেন, যার মাধ্যমে সংঘর্ষে নিহতদের পরিবারকে পারিবারিক পেনশন দেওয়া হবে, যেখানে মেডিক্যাল তথ্যাবলী আপলোড করে জখমেরা বিনামূল্যে চিকিৎসা করাতে পারবেন, যেখানে সংঘর্ষে অত্যাচারিতা, ঘরপোড়ারা নিজেদের এফআইআর দায়ের করতে পারবেন। অভিযোগকারিণীরা দাবি করেন, তাঁরা অভিযোগ দায়ের করতে গেলেও থানা এফআইআর নেয়নি। তাই জ়িরো এফআইআর দায়ের করার নির্দিষ্ট গাইডলাইন জারি করুক আদালত। গোটা বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে নোটিস পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
মণিপুরের কুকি বনাম মেইতেই সংঘর্ষ নাগা এলাকায় ছড়িয়ে পড়া ও নাগা বিধায়কদের মেইতেই বিধায়কদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকপত্র প্রদানের পরে নাগারাও এই চাপানউতোরে জড়িয়ে পড়েছেন। তার মধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে একটি স্বীকারোক্তির ভিডিয়ো, যেখানে এনএসসিএন আইএমের এক গ্রেফতার হওয়া জঙ্গিকে বলতে দেখা গিয়েছে আইএম মেইতেইদের একে, এম১৬-এর মতো আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে সাহায্য করছে ও তাদের ১৫ জন ক্যাডার সদর দফতরের নির্দেশে কুকিদের বিরুদ্ধে লড়তে মেইতেইদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছে। বদলে তারা মেইতেইদের কাছ থেকে ১০-১৫ লক্ষ টাকা পাচ্ছে। আইএম-এর সশস্ত্র বাহিনী নাগা আর্মি অবশ্য ওই ভিডিয়োর সত্যতা নস্যাৎ করেছে।