মহুয়ার মামলায় নেট-নজরদারি থেকে পিছু হটল আধারও

নেট-দুনিয়ায় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রকের নজরদারির পরিকল্পনার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:১৯
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রকের পর এ বার আধার-কর্তৃপক্ষ। ফেসবুক-টুইটারে নজরদারির পরিকল্পনা থেকে পিছু হঠতে হল আধার-কর্তৃপক্ষকে।

Advertisement

নেট-দুনিয়ায় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রকের নজরদারির পরিকল্পনার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। শীর্ষ আদালতের কড়া প্রশ্নের মুখে তারা সেই পরিকল্পনা থেকে সরে আসে। এর পর আধার কর্তৃপক্ষ গত বছর জুলাইয়ে ‘সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং এজেন্সি’ তৈরির জন্য দরপত্র আহ্বান করে। তার বিরুদ্ধেও সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন মহুয়া। আজ আধার কর্তৃপক্ষ সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছেন, ওই দরপত্রের জন্য আমন্ত্রণ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। শুধু তা-ই নয়। ভবিষ্যতে এই রকম কোনও দরপত্র আহ্বান করা হবে না বলেও শীর্ষ আদালতকে জানিয়েছেন আধার কর্তৃপক্ষ।

নেট-দুনিয়ায় নজরদারির বিরুদ্ধে ২-০ জয়কে ‘বিরাট জয়’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে মহুয়া বলেন, ‘‘নিরীহ মানুষের উপরে সরকারের বেআইনি নজরদারি আটকাতে পেরে এই রাউন্ডেও জয়ের জন্য খুবই খুশি। কিন্তু চিন্তার কারণও থাকছে। আমি নিশ্চিত, সরকার অন্য কোনও ঘুরপথ খুঁজে বের করবে। তবে নিশ্চিত থাকুন, দরকার পড়লে আমি ফের আদালতে যাব।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: ঘেরাও হওয়া সেই নাজমা-ই এখন সকলের প্রিয়

মহুয়া মৈত্র তাঁর মামলায় অভিযোগ তুলেছিলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় আধার কর্তৃপক্ষের নজরদারির পরিকল্পনা ব্যক্তি পরিসরের অধিকারে হস্তক্ষেপ। এই ব্যক্তি পরিসরের অধিকারকে সুপ্রিম কোর্টই মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি দিয়েছে। তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রক তাদের নজরদারির পরিকল্পনার পিছনে যুক্তি দিয়েছিল, সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে নেট-দুনিয়ায় কী ধরনের আলোচনা চলছে, তা দেখা এবং অভাব-অভিযোগ দূর করার জন্যই নজরদারির ব্যবস্থা বা ‘সোশ্যাল মিডিয়া হাব’ দরকার। এই প্রস্তাব শুনে বিচারপতিরা মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘যদি সব টুইট, হোয়াটসঅ্যাপ দেখা হয়, তা হলে আমরা নজরদার রাষ্ট্র তৈরির দিকেই এগোচ্ছি!’’ আদালতের রায়ের আগেই মন্ত্রক সেই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করে।

একই ভাবে আধার কর্তৃপক্ষও নজরদারি সংস্থা তৈরির পিছনে যুক্তি দেয়, আধার নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় কী আলোচনা চলছে, তা দেখা দরকার। নেতিবাচক মনোভাব থাকলে, তা দূর করা দরকার। আধারের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ শুনে শীর্ষ আদালত বলেছিল, ‘‘আধারের বৈধতা নিয়ে মামলায় তো আধার কর্তৃপক্ষ বা ইউআইডিএআই ঠিক উল্টো যুক্তিই দিয়েছিল।

বলেছিল, তারা নজরদারির বিরুদ্ধে!’’ মহুয়া সুপ্রিম কোর্টে যুক্তি দেন, তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রক পিছু হটার পর আধার কর্তৃপক্ষ অন্য নামে নজরদারি ব্যবস্থা তৈরি করতে চাইছে।

আজ বিচারপতি সঞ্জয় কিষেণ কউলের বেঞ্চকে আধার কর্তৃপক্ষ জানায়, ওই দরপত্র প্রত্যাহার করা হয়েছে। তার সময়ও পেরিয়ে গিয়েছে। নতুন করে দরপত্র আহ্বানের কোনও পরিকল্পনা নেই। মহুয়ার আইনজীবী অভিষেক মনুসিঙ্ঘভি দাবি তোলেন, এই বয়ান রেকর্ড করে রাখা হোক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement