ফাইল ছবি
স্নাতক স্তরে শিক্ষক-পডুয়া অনুপাতে বড় বদল আনতে চলেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। একাধিক বিভাগে পড়ুয়ার তুলনায় শিক্ষকের হার বর্তমানের চেয়ে কমানো হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। সম্প্রতি এ নিয়ে একটি খসড়া প্রস্তাবনা তৈরি করেছে ইউজিসি। সেই প্রস্তাবনায় বিষয়টি রাখা হয়েছে। এর সঙ্গে বিভিন্ন পেশাগত শিক্ষার ক্ষেত্রে চুক্তির ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। এর ফলে ছাঁটাইয়ের আশঙ্কায় ভুগছেন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
যদিও বর্তমানে এই নিয়ে নির্দিষ্ট কোনও নীতি নেই। ২০০৮ সালে ইউপিএ সরকারের আমলে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ওবিসি-র জন্য ২৭ শতাংশ সংরক্ষণের নীতি চালু হওয়া পর থেকে শিক্ষক-পড়ুয়া অনুপাত হয় ১:১৮। এই অনুপাতেই সরকারি সিলমোহর পড়ে। তার পর থেকে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-পডুয়ার এই অনুপাত চলে আসছে। কিন্তু এ বার তাতে বদল আনতে চলেছে ইউজিসি।
জানা গিয়েছে, প্রস্তাবনায় সমাজবিদ্যায় শিক্ষক-পড়ুয়ার হার ১:৩০, বিজ্ঞানে ১:২৫ এবং বাণিজ্য বিভাগ এবং অন্যান্য বৃত্তিমূলক বিভাগে ১:৩০ করা হবে। এই নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলি ও জড়িত ব্যক্তিদের মতামত চাওয়া হয়েছে। ১১ ফেব্রুয়ারির মধ্য এই মত জানাতে হবে বলে ইউজিসি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে।
তবে এই বদলকে কেন্দ্রে করে ছাঁটায়ের সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছে শিক্ষক সংগঠনগুলি। তাদের অভিযোগ, এর ফলে খরচ কমাতে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটবে।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠনের মত, ‘‘এর ফলে ব্যাপক হারে শিক্ষক ছাঁটাই শুরু হবে এবং কমবে শিক্ষার মান।’’
খসড়া নীতিতে গণমাধ্যম, ফার্মেসির জন্য শিক্ষক-পড়ুয়া অনুপাত ১:১৫, স্থাপত্য এবং ডিজাইন কোর্সের জন্য ১:১০।
খসড়া প্রসস্তাবটিতে বৃত্তিমুখী পাঠক্রমের জন্য, পেশা বা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের চুক্তিভিত্তিক বা অতিথি অধ্যাপক হিসাবে নেওয়া হবে। যা প্রতিষ্ঠানের মোট ফ্যাকাল্টির ৫০ শতাংশ হবে। যুক্তি হিসাবে বলা হয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিল্পের মধ্যে ব্যবধান কমানোর জন্য এই প্রস্তাব রাখা হয়েছে। অর্থাৎ সরাসরি পেশা বা শিল্পের ব্যক্তিরা যদি পড়ান তবে পঠন-পাঠন অনেক বেশী কর্মসংসস্থানমুখী হবে।
তবে শিক্ষক সংগঠনের বক্তব্য, এর অর্থ— পড়ানোর চাপও বাড়বে, তেমনই চাকরিও হবে অস্থায়ী। ফলে অনিশ্চিত হবে শিক্ষকদের ভবিষ্যৎ।