গ্রাফিক: সনৎ সিংহ
তুচ্ছাতিতুচ্ছ বিষয়ে স্বামীর সঙ্গে অশান্তি লেগে থাকত। রাগের মাথায় একদিন স্বামী বলেছিলেন, সব সস্পত্তি ভাই এবং অন্যান্য সদস্যদের দিয়ে যাবেন। সেই ধারণার বশবর্তী হয়ে স্বামীর খাবারে নিয়মিত ওষুধ মেশাতেন স্ত্রী। বুঝতে পেরে পুলিশেকে অভিযোগ জানান স্বামী। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাঁর স্ত্রীকে গ্রেফতার করছে।
ঘটনাটি কেরলের কোট্টায়াম জেলার পালা শহরের। ২০০৬ সালে সতীশ সুরেশের (৩৮) সঙ্গে বিয়ে হয় আশার (৩৬)। সেই সময় নিজের ব্যবসা নিয়ে লড়াই চালাচ্ছিলেন সতীশ। সেই ব্যবসা থেকে যা আয় হত, তাতে কোনও মতে সংসার চালাতেন তিনি। কিন্তু আইসক্রিম ব্যবসা শুরু করার পর তাঁর অবস্থা ভাল হতে শুরু করে। ২০১২ সালে তাঁরা একটি বাড়িও কেনেন।
সতীশের অভিযোগ অনুযায়ী, ছোটখাটো বিষয় নিয়ে আশা তাঁর সঙ্গে অশান্তি করতেন। কিছু দিন যেতেই সতীশ লক্ষ করেন, তিনি অল্পে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে গেলে তিনি জানান, এর কারণ সুগার হতে পারে। কিন্তু ওষুধ খাওয়ার পরও তাঁর ক্লান্তি কাটে না।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে সতীশ বাড়ির খাবার খাওয়া বন্ধ করে দেন। দেখা যায়, তাঁর কান্তি ভাব কেটে গিয়েছে। কাজের সময় ঝিমুনিও লাগছে না। তখন সন্দেহ হয় স্ত্রীর উপর। স্ত্রী আশাই কি তাঁর খাবারে কিছু মেশাচ্ছেন?
এ ব্যাপারে সতীশ সাহায্য নেন তাঁর এক বন্ধুর। বন্ধুকে সমস্ত ঘটনা জানিয়ে সতীশ বলেন, তাঁর স্ত্রী খাবারে কিছু মেশাচ্ছেন কি না তা জানতে।
বন্ধু তাঁর স্ত্রীর কাছে কৌশলে বিষয়টি জানতে চাইলে, আশা জানান তিনি সতীশের খাবার ও জলে নিয়মিত ওষুধ মেশান। ওই বন্ধুর হোসটাসঅ্যাপে আশা সেই সব ওষুধের ছবিও পাঠান। এই তথ্য জানার পরই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন সতীশ। ঘরের মধ্যে বসানো সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশকে দেন তিনি। এই অভিযোগে ভিত্তিতে আশাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে আশা জানিয়েছেন, একদিন বচসার সময় সতীশ বলেন, সমস্ত সম্পত্তি তাঁর পরিবার ও ভাইকে দিয়ে দেবেন। সে আশঙ্কাতেই তিনি এ কাজ করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিয়মিত ওষুধ দিয়ে ধীরে ধীরে সতীশকে খুন করার পরিকল্পনা করেছিলেন তাঁর স্ত্রী? না কি এর পিছনে অন্য কোনও রহস্য আছে, তাই নিয়ে তদন্ত চলছে।