সস্ত্রীক উদ্ধব ঠাকরে। ছবি: এপি।
প্রায় এক মাস ধরে টানাপড়েন চলছিল। নির্বাচনী ফল প্রকাশের পর মহারাষ্ট্রে সরকার কে গড়বে, তা নিয়ে স্পষ্ট কোনও দিশা তৈরি হচ্ছিল না। অবশেষে শুক্রবার সন্ধ্যায় এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার জানিয়ে দিলেন, মহারাষ্ট্রের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। নয়া সরকার গড়ছে শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেসের নয়া জোট।
শুধু তাই নয়, যে কোনও জোট সরকারে তারা যে আড়াই বছরের মুখ্যমন্ত্রিত্ব এত দিন দাবি করে এসেছিল, সুরাহা হয়েছে তারও। পওয়ার জানিয়েছেন, আগামী পাঁচ বছররের জন্য উদ্ধবই থাকবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। মহারাষ্ট্রে জোট সরকারকে নেতৃত্বও দেবেন উদ্ধব।
বিজেপি যদিও নয়া এই জোটকে কটাক্ষ করে ‘সুবিধাবাদীদের জোট’ বলেছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা নিতিন গডকড়ী এ দিন বলেন, ‘‘ওই জোট সরকার গড়লে আট মাসও টিকবে না। ভেঙে যাবে।’’
আরও পড়ুন: গত তিন বছরে মোদীর বিদেশ সফরে শুধু বিমানের খরচই ২৫৫ কোটি! রাজ্যসভায় জানাল বিদেশমন্ত্রক
শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোট সরকারের মুখ কে হবেন, তা নিয়ে এ দিন সন্ধ্যায় মুম্বইয়ের নেহরু সেন্টারে এক ‘হাই প্রোফাইল’ বৈঠকে বসেন ওই দলের বিধায়কেরা। তাদের শীর্ষ নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকে উদ্ধবকেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হতে বলেন কংগ্রেস-এনসিপি নেতারা। এনসিপি নেতা পওয়ার জানিয়েছেন, বৈঠকে ঐকমত্য ভাভে উদ্ধবের নামেই সিলমোহর পড়েছে।
বৈঠকের প্রাথমিক পর্ব শেষে নেহরু সেন্টার থেকে বেরিয়ে যান উদ্ধব ঠাকরে, শরদ পওয়ার এবং আদিত্য ঠাকরে। বাকি বিধায়কদের মধ্যে বৈঠক চলতে থাকে। প্রাথমিক পর্বের পর উদ্ধব বলেন, ‘‘বৈঠক খুবই সদর্থক এবং ফলপ্রসূ হয়েছে।’’ একই কথা জানান কংগ্রেস নেতারাও।
বৈঠকের প্রাথমিক পর্ব শেষে ফিরে যাচ্ছেন শরদ পওয়ার। ছবি: পিটিআই।
এ দিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর নাম নিয়ে জল্পনার অবসান ঘটলেও উপমুখ্যমন্ত্রী বা স্পিকার পদে কে বসবেন, তা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। সূত্রের খবর, উপমুখ্যমন্ত্রী এবং স্পিকার পদের দাবিদার কংগ্রেস। ক্যাবিনেটের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদের দাবিদার হিসাবে এনসিপি-র বিভিন্ন নেতার নাম উঠে আসছে। ফলে আগামিকাল, শনিবারও এই বৈঠক চলবে বলে জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা পৃথ্বীরাজ চহ্বাণ এবং প্রফুল্ল পটেল।
আরও পড়ুন: বেঙ্গালুরুতে আটক আরও ৫৭ জনকে বনগাঁ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ‘পুশ ব্যাক’ শনিবার
বৈঠক শুরুর আগে থেকেই অবশ্য মুখ্যমন্ত্রিত্বের জন্য চাপ বাড়াতে শুরু করেছিল শিবসেনা। বৈঠকের আগেই সেনার মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত এ দিন সকালে মন্তব্য করেন, আগামী পাঁচ বছরের জন্য তাঁদের দলেরই কেউ মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকবেন। মাসখানেকের টানাপড়েন শেষে মহা-জট কাটলেও এই সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে সন্দিহান শিবসেনার প্রাক্তন শরিক বিজেপি।
এ দিন ঝাড়খণ্ড বিধানসভা নির্বাচনের জন্য দলীয় প্রচারে রাঁচীতে গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী জানান, আদর্শগত ভাবে পার্থক্য থাকলেও কেবলমাত্র বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে সরাতেই ‘সুবিধাবাদীরা’ জোট করেছে। তাঁর কথায়, ‘‘এদের জোট গড়ে উঠেছে সুবিধাবাদের উপর ভিত্তি করে। তিন দলই একত্র হয়েছে একটাই উদ্দেশ্য নিয়ে— বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখো।’’ এই জোট যে একেবারেই টিকবে না, সে ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত বলেই দাবি করেছেন গডকড়ী। তিনি বলেন, ‘‘সরকার গড়লেও ছয় থেকে আট মাসের বেশি টিকবে না তা।’’