মহারাষ্ট্রে বিরোধী আসনেই শরদের দল, চাপ বাড়ল উদ্ধবের

রাজ্যে এই মুহূর্তে বিজেপি-বিরোধী বিকল্প সরকার গড়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে পওয়ার বলেন, ‘‘এই প্রশ্ন উঠছে কী ভাবে?’’

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৯ ০২:১৯
Share:

দলীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার। মুম্বইয়ে বুধবার। ছবি: পিটিআই।

মহারাষ্ট্রে শিবসেনার সঙ্গে সরকার গড়ার সম্ভাবনা খারিজ করে দিলেন এনসিপি-র শীর্ষ নেতা শরদ পওয়ার। তিনি জানিয়েছেন, এনসিপি ও কংগ্রেস বিরোধী আসনে বসতে তৈরি। এই পরিস্থিতিতে কিছুটা চাপের মধ্যে পড়ে শিবসেনার ছয় মন্ত্রী আজ তদারকি মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসের নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে যোগ দেন। কৃষকদের দুর্দশা কাটাতে সরকারি পদক্ষেপ নিয়ে ডাকা সেই বৈঠকের পরে বিজেপি আশা প্রকাশ করেছে, মহারাষ্ট্রে জোট সরকার গড়া নিয়ে শীঘ্রই ‘ভাল খবর’ শোনাতে পারবে তাঁরা। সরকার গড়ার বিষয় নিয়ে আগামিকাল রাজ্যপাল ভগৎ সিংহ কোশিয়ারির সঙ্গে দেখা করতে চলেছে বিজেপির প্রতিনিধি দল। শিবসেনা অবশ্য মুখ্যমন্ত্রিত্ব ভাগ করে নেওয়ার দাবি নিয়ে আজও অনড় রয়েছে।

Advertisement

রাজ্যে এই মুহূর্তে বিজেপি-বিরোধী বিকল্প সরকার গড়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে পওয়ার বলেন, ‘‘এই প্রশ্ন উঠছে কী ভাবে?’’ তাঁর ব্যাখ্যা, বিজেপি-শিবসেনা ২৫ বছর ধরে জোট করে রয়েছে। আজ হোক, কাল হোক তারা মিলবেই। মরাঠা স্ট্রংম্যানের মন্তব্য, ‘‘বিজেপি-শিবসেনার উচিত দ্রুত সরকার গড়ে রাজ্যকে সাংবিধানিক সঙ্কট থেকে রক্ষা করা।’’ মহারাষ্ট্র বিধানসভার মেয়াদ ৯ নভেম্বর শেষ হচ্ছে। পওয়ার বলেন, ‘‘আমাদের জোটের কাছে সংখ্যা থাকলে আমরা বসে থাকতাম না।’’ মহারাষ্ট্রের চার বারের মুখ্যমন্ত্রী পওয়ার এ বার যে আর কুর্সিতে বসতে আগ্রহী নন, সে কথাও জানিয়ে দেন।

পওয়ারের অবস্থানে শিবসেনার দড়কষাকষির রাস্তা অনেকটাই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিজেপিও আশা প্রকাশ করেছে, রাজ্যে শীঘ্রই তাদের জোটের সরকার হতে চলেছে। বিরোধী আসনে বসা নিয়ে এনসিপি নেতার মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে বিজেপি। ফডণবীসের বৈঠকের পরে বিজেপি নেতা সুধীর মুঙ্গানতিয়ার সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘যতই চেষ্টা হোক, জলকে ভাগ করা সম্ভব নয়। আমরা অপেক্ষা করে রয়েছি। যে কোনও সময়েই ভাল খবর আসতে পারে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘মহারাষ্ট্রে বিজেপি-শিবসেনার জোট সরকারই হবে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: দূষণ রোধে প্রচার বাড়ান: প্রিয়ঙ্কা

এনসিপি আগেই শিবসেনাকে শর্ত দিয়েছিল, এনডিএ ছেড়ে এলে তবেই মহারাষ্ট্রে সরকার গড়া নিয়ে আলোচনা চলতে পারে। তবে উদ্ধব ঠাকরের দল তাতে যে বিশেষ আগ্রহী নয়, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। আজ দিল্লিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে যোগ দিয়েছেন শিবসেনা নেতা অরবিন্দ সবন্ত। আর মুম্বইয়ে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে শিবসেনার মন্ত্রীরা ফডণবীসের বাড়িতে যান। দফতর ভাগাভাগি নিয়ে তাঁদের কথা হয়েছে। সূত্রের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়ার প্রশ্নই নেই, এমনকি অর্থ, স্বরাষ্ট্র কিংবা নগরোন্নয়ন দফতরও ছাড়তে রাজি নয় বিজেপি। তবে উপ-মুখ্যমন্ত্রীর পদ তাদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা ভাবে হয়েছে। জট কাটাতে বিজেপি নেতা নিতিন গডকড়ীর উপর ভরসা রাখছে শিবসেনাও। সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতের সঙ্গে বৈঠক করতে আগামিকাল নাগপুরে যাচ্ছেন গডকড়ী। ফডণবীস মঙ্গলবার রাতেই ভাগবতের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। এখন গডকড়ী-ভাগবত আলোচনায় সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসে কি না, সেটা দেখার।

এই পরিস্থিতিতে শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত আজ বলেছেন, ‘‘সব থেকে বড় দল হিসেবে বিজেপি যদি সরকার গড়ার দাবি জানায়, তারা তা করতেই পারে। তবে উদ্ধব ঠাকরে বিজেপির থেকে কোনও প্রস্তাব পাননি।’’ রাউত কয়েকদিন আগেই দাবি করেছিলেন, তাঁদের দিকে অন্তত ১৭০ জন বিধায়কের সমর্থন রয়েছে। এ নিয়ে আজ পওয়ারের কটাক্ষ, ‘‘এই সংখ্যা কী ভাবে এল, সেটা আমরাও খুঁজছি!’’

মহারাষ্ট্র নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যেই সনিয়া গাঁধীর ঘনিষ্ঠ নেতা আহমেদ পটেল আজ নিতিন গডকড়ীর সঙ্গে দেখা করেছেন। পরে পটেল দাবি করেন, বৈঠকে মহারাষ্ট্রের ‘এম’ নিয়েও কথা ওঠেনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement