ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি তিনি। গোটা বিশ্বের সবচেয়ে অর্থবানদের তালিকায় তাঁর স্থান ১৩। তিনি মুকেশ অম্বানী। রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক। কিন্তু আপনি কি জানেন, এই ধনকুবেরের বেতন তাঁরই দুই অধস্তন কর্মচারীর বেতনের তুলনায় কম?
সম্প্রতি রিলায়্যান্স-এর বার্ষিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, মুকেশ অম্বানীর বার্ষিক আয় ভারতীয় মুদ্রায় ১৫ কোটি টাকা। ২০০৮ সাল থেকে মুকেশ তাঁর বেতনে কোনও পরিবর্তন আনেননি।
রিলায়্যান্স-এর ২০১৯ সালে প্রকাশিত বার্ষিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, নিজেকে ‘উদাহরণ’ হিসেবে প্রমাণ করার তাগিদেই তাঁর এই সিদ্ধান্ত।
কিন্তু তাঁর মানে এই নয় যে— মুকেশ তাঁর বাকি কর্মচারীদেরও বেতন বৃদ্ধি থেকে বঞ্চিত করেছেন। সেটা করেননি তিনি। এর মধ্যে আলাদা ভাবে বলতে হবে তাঁর দুই উচ্চপদস্থ কর্মচারী তথা তুতো ভাই নিখিল মেসওয়ানি এবং হিতল মেসওয়ানি-র কথা। এঁদের বেতন প্রতি বছরই বেড়েছে উল্লেখযোগ্য ভাবে।
বাড়তে বাড়তে তাঁর এই দুই কর্মচারীর বর্তমান বার্ষিক আয় ছাপিয়ে গিয়েছে স্বয়ং মুকেশ অম্বানীর বেতনকেও।
নিখিল রিলায়্যান্সে যোগ দেন ১৯৮৬ সালে। বর্তমানে সংস্থার এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর নিখিলের বার্ষিক বেতন ২০১৪-১৫ সালে ছিল ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১২ কোটি টাকা।
২০১৫-১৬ সালে নিখিলের বেতন হয় ১৪ কোটি ৪২ লক্ষ টাকা এবং ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষে আরও বৃদ্ধি পেয়ে তা দাঁড়ায় প্রায় ১৬ কোটি টাকায়। ২০১৭-১৮ সালে তাঁর বেতন হয় ১৯ কোটি ৯৯ লক্ষ টাকা। নিখিলের বর্তমান বার্ষিক বেতন ভারতীয় মুদ্রায় ২০ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকা।
নিখিলের মতো হিতলেরও বেতন প্রতি বছর পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। হিতল রিলায়্যান্সে যোগ দেন ১৯৯৫ সালে। তিনিও এখন সংস্থার এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর। ২০১৪-১৫ অর্থবর্ষে তাঁর বেতন ছিল ভারতীয় মুদ্রায় ১২ কোটি ৩ লক্ষ টাকা। তাঁর বর্তমান আয় প্রায় ২০ কোটি টাকা, যা মুকেশ অম্বানীর বেতনের থেকে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা বেশি।
মুকেশের থেকে বেশি না হলেও, রিলায়্যান্সে মোটা বেতন পাওয়া কর্মচারী আরও অনেকেই আছেন। আর এক এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর পিএমএস প্রসাদের বেতন গত বছরের তুলনায় প্রায় দেড় কোটি টাকা বেড়ে এ বছর হয়েছে ১০ কোটি ১ লক্ষ টাকা।
কোম্পানির তৈল শোধনাগারের প্রধান পবন কুমার কপিলের বেতন ৩ কোটি ৪৭ লক্ষ থেকে বেড়ে এ বার দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ১৭ লক্ষ টাকায়।
নিজের বেতন না বাড়ালেও, স্ত্রী নীতা অম্বানীর বেতন বৃদ্ধি করেছেন মুকেশ। রিলায়্যান্সের অনির্বাহী পরিচালক (নন একজিকিউটিভ ডিরেক্টর) নীতার ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে বেতন ছিল ভারতীয় মুদ্রায় দেড় কোটি টাকা, যা এই বছর বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা।
এ ছাড়া ব্যবসা সংক্রান্ত আলোচনার জন্য নীতার আগের বছর প্রতি ‘সিটিং’-এ আয় ছিল ৬ লক্ষ টাকা, যা এই বছর বেড়ে হয়েছে ৭ লক্ষ টাকা।