(বাঁ দিকে) মিমেটাস স্পাইনাটাস এবং মিমেটাস পারভিউলাস (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
দক্ষিণ ভারত থেকে নতুন দুই প্রজাতির স্বগোত্রভোজী মাকড়সার সন্ধান পেলেন ভারতীয় প্রাণী সর্বেক্ষণের বিজ্ঞানীরা। এই দলের নেতৃত্বে ছিলেন প্রাণী সর্বেক্ষণের বিজ্ঞানী সৌভিক সেন। এ নিয়ে স্বজাতিভুক (মিমেটাস জেনাস বা গোত্রভুক্ত) মাকড়সার মোট তিনটি প্রজাতির সন্ধান ভারতে পাওয়া গেল। প্রথমটির সন্ধান মিলেছিল প্রায় ১১৮ বছর আগে। তার এত বছর বাদে ফের পশ্চিমঘাট পর্বতমালার দক্ষিণ ভাগে এই দু’টি প্রজাতির সন্ধান মিলেছে। একটি প্রজাতির নাম দেওয়া হয়েছে মিমেটাস স্পাইনাটাস এবং অন্যটির মিমেটাস পারভিউলাস। এই দু’টি প্রজাতির আবিষ্কারের বিষয়টি ‘জুট্যাক্সা’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা জানান, এই ধরনের মাকড়সার মূল খাদ্য অন্য মাকড়সারা। এদের শিকারের পদ্ধতিও বেশ অভিনব। অন্য মাকড়সার জালে ফেঁসে যাওয়ার ছল করে এরা নিজেদের শিকারকে প্রলুব্ধ করে এবং সেই ফাঁদে পা দিলেই অন্য মাকড়সাদের এরা খেয়ে ফেলে। এ ছাড়াও, অন্য মাকড়সাদের মুখ থেকে খাবার ছিনিয়ে খেতেও ওস্তাদ এরা। মাকড়সার ডিমও এদের খাদ্যতালিকায় আছে। তাই বিজ্ঞানীরা এদের ‘পাইরেট স্পাইডার’ বা দস্যু মাকড়সাও বলেন।
ভারতীয় প্রাণী সর্বেক্ষণের অধিকর্তা ধৃতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, ভারতীয় উপমহাদেশের জলবায়ুর নিরিখে পশ্চিমঘাট পর্বতমালা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ এবং এই এলাকায় জীববৈচিত্র বারবার বিজ্ঞানীদের বিস্মিত করেছে। এই নতুন দুই প্রজাতির মাকড়সার আবিষ্কার ওই অঞ্চলে জীববৈচিত্রের আরও নিবিড় সন্ধানের উপযোগিতা প্রমাণ করে।
মাকড়সা সন্ধানী বিজ্ঞানীদলে সৌভিক ছাড়াও প্রাণী সর্বেক্ষণের বিজ্ঞানী পি পি সুধীন এবং কোচিনের সেক্রেড হার্ট কলেজের শিক্ষক প্রদীপ এম শঙ্করণ ছিলেন। কর্নাটকের মুকাম্বিকা অভয়ারণ্য থেকে সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল হালকা হলুদ রঙের মাথা এবং ধূসর রঙের পেটের একটি মাকড়সার। তার পিঠে শিরদাঁড়ার মতো রোমও আছে। সেটির নাম দেওয়া হয়েছে মিমেটাস স্পাইনাটাস। কেরলের এর্নাকুলাম জেলা থেকে ঘিয়ে-গোলাপি রঙের মাথা এবং কালো দেহবিশিষ্ট মাকড়সার নাম দেওয়া হয়েছে মিমেটাস পারভিউলাস।