এই দুই যুবককে মারধর করা হয়েছে। ছবি; সংগৃহীত।
এক আদিবাসী শ্রমিকের মুখে, গায়ে প্রস্রাবের ঘটনা নিয়ে যখন গোটা মধ্যপ্রদেশে উত্তাল। রাজনীতি সরগরম। খোদ মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ চৌহান সেই আদিবাসী শ্রমিক দশমত রাওয়তকে বাসভবনে ঢেকে পা ধুইয়ে দিলেন, চাইলেন ক্ষমাও, তার ঠিক ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এই মধ্যপ্রদেশেরই অন্য প্রান্তে দুই দলিত যুবককে মারধর করে নোংরা খাওয়ানোর অভিযোগ প্রকাশ্যে এল।
এ বার ঘটনাস্থল শিবপুরী জেলা। গ্রামের মহিলাদের হেনস্থার অভিযোগে দলিত সম্প্রদায়ের ওই দুই যুবককে বেধড়ক মারধর করলেন গ্রামবাসীরা। শুধু তাই-ই নয়, তাঁদের মুখে কালি মাখিয়ে, জুতের মালা পরিয়ে গোটা গ্রাম ঘোরানো হয়। এতেও ক্ষান্ত হননি গ্রামবাসীরা। ‘শাস্তি’ দিতে দুই যুবককে নোংরা খেতেও বাধ্য করা হয়।
ঘটনাটি গত ৩০ জুনের। সেই ঘটনার ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়। পুলিশের হাতে সেই ভিডিয়ো পৌঁছলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তৎপর হয়। পুলিশ একটি এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করে। বৃহসপ্তিবার দুই মহিলা-সহ সাত জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
মাগরোনি থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক দীপক শর্মা জানিয়েছেন, দলিত যুবকদের বিরুদ্ধে গ্রামের মহিলাদের হেনস্থার অভিযোগ ওঠে। কিন্তু তদন্তে নেমে জানা গিয়েছে, যে অভিযোগ আনা হয়েছিল যুবকদের বিরুদ্ধে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। পুলিশ আধিকারিক বলেন, “অভিযুক্ত গ্রামবাসীরা দাবি করেন যে, ওই দুই যুবক গ্রামের মহিলাদের হেনস্থা করেছেন। তাঁদের আপত্তিকর ছবি তুলেছেন। এমনকি তাঁদের এই কাজ সিসিটিভিতেও ধরা পড়েছে বলে দাবি করেছেন অভিযুক্তরা।” তবে তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ওই দুই যুবক গ্রামের কয়েক জন তরুণীর সঙ্গে ফোনে কথা বলতেন। সামনাসামনি দেখা করেননি।
গত ৪ জুন এত আদিবাসী শ্রমিকের মুখে এবং গায়ে প্রস্রাবের অভিযোগ উঠেছিল প্রবেশ শুক্ল নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার পর শোরগোল পড়ে যায় গোটা মধ্যপ্রদেশে। বিজেপি সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। শেষমেশ প্রশাসন তৎপর হয়। অভিযুক্তের বাড়ি বুলডোজ়ার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। খোদ মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ বৃহস্পতিবার ওই আদিবাসী শ্রমিককে নিজের বাসভবনে ডেকে নিয়ে এসে পা ধুইয়ে দেন নিজের হাতে। উপহার দেন। আবার নিজের হাতে খাবার খাইয়েও দেন। সব শেষে ক্ষমাও চান।