সেনাবাহিনীতে মোটা টাকা ঘুষের বিনিময়ে বদলির চক্র ফাঁস করল সিবিআই। দিল্লিতে সেনার সদর দফতরে এই দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে রঙ্গনাথন সুব্রমণি মোনি নামে এক সেনাকর্তা এবং গৌরব কোহালি নামে এক মধ্যস্থতাকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের ৩ দিন সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে বিশেষ আদালত।
সিবিআই সূত্রের খবর, গত কাল বেঙ্গালুরুর এক সেনা অফিসারের বদলির জন্য দু’লাখ টাকা হাতবদলের সময়ই হাতেনাতে ধরা পড়েন ওই দু’জন। বেআইন লেনদেনের আঁচ পেয়ে ফাঁদ পেতেছিলেন গোয়েন্দারা। তাতেই কেঁচো খুড়তে সাপ বেরোনোর উপক্রম! দেখা গিয়েছে, পছন্দসই জায়গায় বদলির টোপ দিয়ে রীতিমতো ব্যবসা ফেঁদে বসেছেন সেনাকর্তাদের একাংশ। আপাতত দু’জন গ্রেফতার হলেও সিবিআই জানিয়েছে, দুর্নীতির শিকড় আরও গভীরে।
সিবিআই জানিয়েছে, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সুব্রমণি মোনি, ব্রিগেডিয়ার এস কে গ্রোভার, পুরুষোত্তম নামে হায়দরাবাদের এক সেনা অফিসার, বেঙ্গালুরুর এক ব্যারাক ও স্টোর ম্যানেজার এস সুভাষ এবং মধ্যস্থতাকারী গৌরব কোহালির বিরুদ্ধে মামলা করেছে তারা। তদন্তে উঠে এসেছে, পছন্দের জায়গায় বদলি পেতে ইচ্ছুক অফিসারদের সঙ্গে প্রথম যোগাযোগটা করতেন পুরুষোত্তম। অন্য পক্ষ মোটা টাকা দিতে রাজি থাকলে জানানো হতো কোহালিকে। কোহালির সঙ্গে মেলামেশা রয়েছে সেনার কর্মিবর্গ দফতরের একাংশের। বদলি সংক্রান্ত দায়িত্ব সাধারণত সামলান এই অফিসারেরাই। তাঁদের হাত করেই কাজ হাসিল করত কোহালি।
ঘুষের টাকা লেনদেন হতো হাওয়ালার মাধ্যমে।
সিবিআইয়ের অভিযোগ, এ বারও ঘুষের বিনিময়ে সেনাকর্মী সুভাষের বেঙ্গালুরু থেকে বিশাখাপত্তনমে বদলির জন্য একযোগে চেষ্টা চালাচ্ছিলেন পুরুষোত্তম, কোহালি এবং মোনি। মোনি আবার যোগাযোগ করেছিলেন ব্রিগেডিয়ার এস কে গ্রোভারের সঙ্গে। হাওয়ালার মাধ্যমে সুভাষ পাঁচ লাখ টাকা দিয়েছিলেন কোহালিকে। এর থেকে মোনিকে আবার দু’লাখ টাকা দেয় কোহালি। দিব্যি এগোচ্ছিল সব কিছু। বাদ সাধল সিবিআই।
বদলি বা কর্মক্ষেত্রে দুর্নীতি নিয়ে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক বার অভিযোগ জানিয়েছেন সেনা আধিকারিকেরা। আত্মঘাতীও হয়েছেন অনেকে। কোন কোন সেনা অফিসার ঘুষের বদলে বদলির ফায়দা নিয়েছেন— তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দিয়েছে সিবিআই আদালত।