বাঁ দিক থেকে, রঘুবীর সিংহ ও রাজকুমার। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।
জম্মুর দুই কুখ্যাত দুষ্কৃতী ধরা পড়ল দেগঙ্গায়। তাদের বিরুদ্ধে জম্মু পুলিশের কাছে খুন, ছিনতাই, তোলাবাজির মতো বিভিন্ন অভিযোগ আছে বলে জানতে পেরেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশ। জম্মুর পুলিশ ওই দুই যুবকের নামে ‘দেখা মাত্র গুলির নির্দেশ’ও জারি করেছে বলে জানা গিয়েছে।
বুধবার রাতে দেগঙ্গা এলাকায় টাকি রোডে টহল দিচ্ছিল পুলিশের একটি ভ্যান। রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ কালীয়ানি বিল এলাকায় জম্মু-কাশ্মীরের নম্বরপ্লেট-যুক্ত একটি গাড়ি দেখতে পান পুলিশ কর্মীরা। গাড়িতে দুই যুবক ছিল। সঙ্গে ছিল একটি বাঁদর। গাড়ির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বা ড্রাইভিং লাইসেন্স মেলেনি। পুলিশ কর্মীরা জিজ্ঞাসাবাদ করলে রঘুবীর সিংহ নামে এক যুবক জানায়, বন্ধু রাজকুমারকে নিয়ে সে যাচ্ছিল হাসনাবাদে মামার বাড়িতে। সন্দেহ হওয়ায় ওই যুবকদের আনা হয় থানায়। জেলা পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী জানান, দুই যুবকের পরিচয় জানতে জম্মুর পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। নানা তথ্য পাওয়া গিয়েছে। সেখান থেকেই জানা গিয়েছে, রঘুবীর ও তার বন্ধু রাজকুমারের বাড়ি জম্মুর বিশনা থানার চরলী গ্রামে। তাদের নামে নানা অপরাধের অভিযোগ আছে। সম্প্রতি এক চালককে গুলি করে একটি গাড়ি ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়েছিল দু’জন। সেই গাড়ি নিয়েই এসেছিল হাসনাবাদের দিকে। পুলিশের অনুমান, সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়ার ছক কষেছিল দুই যুবক। কানপুর থেকে ২ হাজার টাকায় তারা বাঁদরটিকে কিনেছিল বলে জেরায় জানিয়েছে ওই দুই যুবক। বাঁদরটি আবার এ দিন এক যুবকের হাতে কামড়ে দিয়ে দেগঙ্গা থানা থেকে পালিয়েছে। হাসনাবাদের দুর্গাপুরের যে ঠিকানা দিয়েছিল রঘুবীর, সেই ঠিকানায় যোগাযোগ করা হলে তার সঙ্গে আত্মীয়তার কথা প্রথমে মানতে চাননি কেউ। ফলে পুলিশের সন্দেহ গাঢ় হয়। যুবকদের জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য বৃহস্পতিবার গোয়েন্দাদের একটি দল বারাসত থেকে দেগঙ্গা থানায় আসে। ইতিমধ্যে হাসনাবাদ থেকেও পৌঁছন কয়েক জন। তাঁদের মধ্যে সুকান্ত মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি নিজেকে রঘুবীরের মামা বলে পরিচয় দিয়ে জানান, রঘুবীরের বাবা পুরুষোত্তম বিএসএফের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। তিনি এক সময়ে হাসনাবাদে কর্মরত ছিলেন। সেই সূত্রেই বিয়ে হয় সুকান্তবাবুর দিদির সঙ্গে।
উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানান, তদন্তের স্বার্থে ওই দুই যুবককে গ্রেফতার করে হাসনাবাদে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাদের গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। কোনও জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে ওই যুবকদের যোগাযোগ আছে কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।