পালার নব নির্বাচিক বিধায়ক এনসিপি-র মানি সি কপ্পন।—নিজস্ব চিত্র।
জয়ে স্বস্তি মিলেছিল গোড়ায়। এখন আবার বিঁধছে বিড়ম্বনার কাঁটাও!
কেরলে লোকসভা ভোটে বামেদের বিপর্যয়ের পরে সদ্য পালা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছেন এলডিএফের শরিক এনসিপি-র মানি সি কপ্পন। নবনির্বাচিত বিধায়কের শপথের পরেই এনসিপি নেতৃত্ব কেরলের বাম মন্ত্রিসভায় তাঁকে জায়গা দেওয়ার দাবি তুলেছেন। তাঁদের যুক্তি, পালা বিধানসভা কেন্দ্রটি তৈরি হওয়ার ৫৪ বছর পরে সেখানে এই প্রথম বার বামেদের জয় সম্ভব হয়েছে যাঁর জন্য, তাঁকে মন্ত্রিসভায় এনে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। সিপিএম আবার পাল্টা জানিয়েছে, কপ্পনকে মন্ত্রী করতে কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু কার জায়গায় তিনি মন্ত্রী হবেন, সেটা ঠিক করতে হবে এনসিপি-কেই। আর তাতেই বেধেছে টানাপড়েন!
দক্ষিণী এই রাজ্যের বাম সরকারে এখন পরিবহণ দফতর রয়েছে এনসিপি-র হাতে। গত তিন বছরে দু’বার সেই দফতরে মন্ত্রী বদল করতে হয়েছে। সিপিএম তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে দেওয়ার পরে এখন কপ্পনকে মন্ত্রী করতে হলে এনসিপি-কে ফের সেই পরিবহণ মন্ত্রীই বদল করতে হবে। যা নিয়ে দলের অন্দরেই আপত্তি রয়েছে। এনসিপি নেতৃত্ব মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে অনুরোধ করেছেন, প্রতিমন্ত্রী হলেও একটি বাড়তি পদ তাঁদের জন্য বরাদ্দ করতে। কিন্তু তাতে আর এক শরিক জেডি (এস)-এর আপত্তি। কারণ, তাদেরও এনসিপি-র মতো তিন বিধায়ক এবং তাঁদের মধ্যে এক জনই মন্ত্রী।
এখন কেরলের পরিবহণমন্ত্রী এ কে শশীন্দ্রনকে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয়েছিল সিপিএমের চাপে। এক মহিলার সঙ্গে মন্ত্রীর অশ্লীল আচরণের অডিয়ো ক্লিপ প্রচারিত হওয়ার পরে সিপিএম শশীন্দ্রনকে পদত্যাগে রাজি করিয়েছিল। তাঁর জায়গায় মন্ত্রিসভায় গিয়েছিলেন টমাস চান্ডি। কিন্তু বছরখানেকের মধ্যেই চান্ডির বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত রিসর্টের জন্য সরকারি জমি জবরদখলের অভিযোগ সামনে আসে। রাজস্ব দফতর রয়েছে এলডিএফের দ্বিতীয় বৃহত্তম শরিক সিপিআইয়ের কাছে। সিপিআই হুঁশিয়ারি দেয়, চান্ডি মন্ত্রিত্বে থাকলে তারা মন্ত্রিসভার বৈঠক বয়কট করবে। চান্ডি বাধ্য হন ইস্তফা দিতে। ইতিমধ্যে নিম্ন আদালতে অভিযোগ থেকে মুক্ত হয়ে শশীন্দ্রন আবার পরিবহণে ফেরেন। বাম সূত্রের খবর, এখন শশীন্দ্রনকে গদিচ্যুত করার জন্য কপ্পনকে মন্ত্রিত্ব দেওয়ার দাবিতে চান্ডিই বেশি সক্রিয়!
প্রশ্ন করা হলে শশীন্দ্রন অবশ্য বলছেন, এই বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত দলে হয়নি। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘মন্ত্রী সংখ্যা বাড়ানোর আর পরিস্থিতি নেই। এনসিপি চাইলে তাদের বর্তমান মন্ত্রীকে সরিয়ে নিয়ে নতুন মন্ত্রীর জন্য সুপারিশ করতেই পারে। সিদ্ধান্ত তাদেরই নিতে হবে।’’
এনসিপি-র এখন উভয় সঙ্কট!