প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে রাজনীতির ময়দানে শিবসেনার দুই গোষ্ঠী। ফাইল চিত্র।
কোভিড সংক্রান্ত সমস্ত বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ায় এ বছর ফের পুরনো উৎসবের মেজাজে মহারাষ্ট্রে জন্মাষ্টমীর দিনের ‘দহি হান্ডি’ প্রতিযোগিতা। আর একে কেন্দ্র করেই রাজনীতির ময়দানে নেমে পড়েছে শিবসেনার দুই গোষ্ঠী। এক দিকে বালাসাহেব ঠাকরের পুত্র উদ্ধবের শিবির, অন্য দিকে বিক্ষুব্ধ শিবসেনা বিধায়কদের নেতা তথা মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিণ্ডের শিবির।
‘দহি হান্ডি’ প্রতিযোগিতায় শূন্যে ঝোলানো একটি দইয়ের হাঁড়ি ভাঙতে হয় প্রতিযোগীদের। একদল প্রতিযোগী পরস্পরের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একটি পিরামিডের আকৃতি তৈরি করেন। তার উপরে উঠে হাঁড়িটি ভাঙা হয়। প্রতিযোগীদের বলা হয়, গোবিন্দা। এই মানব-নির্মিত পিরামিড ভেঙে অনেক সময়েই আহত হন প্রতিযোগীরা। মৃত্যুও ঘটে কখনও। এই বিষয়টিকে মাথায় রেখেই ‘দহি হান্ডি’র প্রতিযোগী, ভক্ত এবং দর্শকদের মন জিততে শিণ্ডের সরকার এ দিন ঘোষণা করেছে, এখন থেকে মহারাষ্ট্রে এই প্রতিযোগিতাকে ‘বিপজ্জনক খেলা’ হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। যে যুবরা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেন, সেই ‘গোবিন্দা’রা খেলোয়াড় কোটায় সরকারি চাকরির জন্য আবেদনও করতে পারবেন। পাশাপাশি দুর্ঘটনায় আহত এবং নিহতদের জন্য আর্থিক সাহায্যেরও ঘোষণা করা হয়েছে।
শুধু এটুকুই নয়, মহারাষ্ট্রের যে দুই এলাকায় এই খেলার জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি, সেই ঠাণে এবং রাজধানী মুম্বইয়ে একাধিক বড় মাপের প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে শিণ্ডে শিবির। তার সঙ্গে থাকছে লক্ষাধিক টাকার পুরস্কারের ঘোষণাও। সেই উপলক্ষে মুম্বই, ঠাণে-সহ নানা জায়গায় শিবসেনা প্রতিষ্ঠাতা বালাসাহেব ঠাকরে এবং দলের প্রয়াত জনপ্রিয় নেতা আনন্দ দিঘের ছবি দিয়ে বড় বড় ব্যানার-পোস্টার দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত এই আনন্দ দিঘের হাত ধরেই শিবসেনায় উত্থান শিণ্ডের।
পিছিয়ে নেই গত মাসেই কুর্সি হারানো মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের শিবিরও। তারাও শিবসেনা প্রতিষ্ঠাতা এবং দিঘের ছবি দিয়ে ব্যানার-পোস্টারে ছেয়ে দিয়েছে মুম্বই, ঠাণে, নাসিক-সহ বহু এলাকা। আর্থিক পুরস্কারের ঘোষণাও করা হয়েছে লক্ষ টাকার। তবে গদি হারানোর ফলে উদ্ধব শিবিরের ঘোষিত অর্থের পরিমাণ কম। যদিও তা উপেক্ষা করেই বিষয়টি নিয়ে প্রচারে নেমেছেন উদ্ধব সমর্থকেরা। রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, অধিকাংশ বিধায়ক হাত ছাড়লেও শিবসেনা সমর্থকদের বড় অংশই এখনও উদ্ধব শিবিরের দিকেই ঝুঁকে। তা ছাড়া সদ্য গঠিত মহারাষ্ট্র সরকারের মন্ত্রিসভায় জায়গা না পেয়ে বা গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক না পেয়ে ক্ষুব্ধ শিণ্ডে শিবিরে চলে যাওয়া শিবসেনা বিধায়কদের অনেকেই। তাঁদের সমর্থকেরাও এই সুযোগে উদ্ধব শিবিরের পাশে দাঁড়িয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।