গ্রাফিক—সনৎ সিংহ।
ত্রিপুরায় লাগাতার হিংসা রুখতে রাজ্য সরকার কী পদক্ষেপ করছে, তা জানাতে ত্রিপুরার ডিজিপি এবং স্বরাষ্ট্রসচিবকে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে তা জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে মঙ্গলবার প্রচারের শেষ দিন, নির্বাচনের দিন এবং ফলপ্রকাশ পর্যন্ত কী নিরাপত্তার ব্যবস্থা বিপ্লব দেবের সরকার করেছে, তাও জানতে চেয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী কী সংখ্যায় রয়েছে, কোন এলাকায় তাঁদের ব্যবহার করা যায়। এ সব তথ্য ত্রিপুরা সরকারের থেকে জানতে চেয়েছেন বিচারপতি।
ত্রিপুরার পরিস্থিতি নিয়ে সোমবারই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। আদালত অবমাননার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলার শুনানিই মঙ্গলবার হল দেশের শীর্ষ আদালতে।
যদিও ত্রিপুরা সরকারের তরফে সুপ্রিম কোর্টকে জানানো হয়েছে, এই সংক্রান্ত তথ্য জানাতে বেশ কিছুটা সময় লাগবে। পৌনে ৪টের সময় ফের হবে এই মামলার শুনানি।
ত্রিপুরায় পুর নির্বাচনের সময়সূচি পরিবর্তনের বিবেচনা করার জন্য দেশের শীর্ষ আদালতে মঙ্গলবার আবেদন জানিয়েছেন তৃণমূলের আইনজীবী। আদালতে তৃণমূলের আইনজীবী বলেছেন, ‘‘রাজনৈতির কর্মী এবং তাঁদের বাড়ির মহিলা-শিশুদের বাড়ি থেকে বের করে এনে মারা হচ্ছে। গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। সেখানে কী ভাবে মানুষ ভোট দিতে বাড়ি থেকে বেরবেন? আকাশ ভেঙে পড়বে নির্বাচনের দিন পরিবর্তন হলে। ১৭টি হিংসার ঘটনা। কোনও গ্রেফতারি নেই।’’
বিপ্লব দেবের রাজ্যে রাজনৈতিক অশান্তি নিয়ে এর আগে শীর্ষ আদালতে মামলা করেছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ সুস্মিতা দেব। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, পুরভোট অবাধ এবং সুষ্ঠু ভাবে করতে হবে। কোনও রাজনৈতিক দল যেন ভোট প্রচারে নেমে বাধার মুখে না পড়ে। শান্তিপূর্ণ ভাবে যেন প্রচার পর্ব চলে।
কিন্তু গত কয়েক দিন ধরেই আগরতলার পরিস্থিতি উত্তপ্ত। দফায় দফায় বাধার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। রবিবার তৃণমূলের যুব সভানেত্রী সায়নী ঘোষকে গ্রেফতার ঘিরে রাজনৈতিক তরজা চরমে উঠেছিল। সোমবারও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মিছিলের অনুমতি বাতিল করা হয়। পরে অবশ্য মিছিলের বদলে পথসভার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
এই সব নিয়েই তৃণমূলের অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে অমান্য করেই তাদের নেতাকর্মীদের উপর হামলা করছে বিজেপি। এবং বিপ্লব দেবের প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সোমবার দিল্লি উ়়ড়ে যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে বলেছিলেন, ‘‘আমরা সবসময় আদালতের নির্দেশকে সম্মান করি। কিন্তু ত্রিপুরায় দেখছি সে নির্দেশও মানা হচ্ছে না। সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত তা মানছেন না।’’