ত্রিপুরা হাইকোর্ট। —ফাইল চিত্র।
সরকারি কর্মীরা কোনও রাজনৈতিক সমাবেশে শ্রোতা হিসেবে উপস্থিত থাকলে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন প্রসঙ্গে নিজস্ব মতামত ও মন্তব্য করলে তাকে কোনও রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে সরকারি কর্মীর প্রচার বলে গণ্য করা হবে না। গত কাল ত্রিপুরা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এ এ কুরেশি একটি মামলার রায় দানে এই নির্দেশ দিয়েছেন।
রাজ্য মৎস্য দফতরের করণিক লিপিকা পালকে অবসরের চার দিন আগে বরখাস্ত করে সরকার। তাঁর সমস্ত বকেয়া আটকে দেওয়া হয়। তাঁর বিরুদ্ধে সরকার অভিযোগ আনে, চাকরিরত অবস্থায় তিনি একটি রাজনৈতিক দলের জনসভায় শ্রোতা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষে মতপ্রকাশ করে নিজের বক্তব্য লেখেন। তিনি তাঁর কৃতকর্মে ত্রিপুরা সার্ভিস কন্ডাক্ট রুলস এর ৫ নং বিধি ভঙ্গ করেছেন বলে ২০১৮ সালের এপ্রিলে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়। এরপরেই লিপিকাদেবী সরকারি সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।
গতকাল প্রধান বিচারপতি কুরেশি তাঁর রায়ে বলেন, নির্বাচনী সমাবেশে সমর্থকরা যেমন যায় ঠিক তেমনই সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সাংবাদিকরাও যায়। যায় বক্তব্য শুনতে বা জানতে। এই সমাবেশে সরকারি কর্মীর শ্রোতা হিসেবে উপস্থিতিকে কখনওই রাজনৈতিক কার্যকলাপ বলা যাবে না। সার্ভিস কন্ডাক্ট রুলস ভঙ্গ বলেও বিবেচনা করা যাবে না।
কারণ, সরকারি কর্মী যেমন নিয়মকানুন মানতে বাধ্য, তেমনই সংবিধান তাঁকে মত প্রকাশের মৌলিক অধিকার দিয়েছে। লিপিকা পালের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তটি অবৈধ ঘোষণা করে তিনি তা খারিজ করে দিয়েছেন। লিপিকাদেবীর আইনজীবী পুরুষোত্তম রায়বর্মন জানান, একই সঙ্গে দু’মাসের মধ্যে তাঁর সমস্ত পাওনা মিটিয়ে দিতে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে।