রূপান্তরকামীদের নিয়ে তৈরি কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ছবি ‘নগরকীর্তন’-এ ‘পুঁটি’র ভূমিকায় ঋদ্ধি সেন।
লিঙ্গ পরিচয়ের জন্য জেলাশাসকের শংসাপত্র লাগত রূপান্তরকামীদের। সেই শংসাপত্র জোগাড় করতে সংশ্লিষ্ট স্তরের আধিকারিকের কাছে তাঁদের দিতে হতে মেডিক্যাল পরীক্ষা। এ বার সেই ঝক্কি (প্রকারান্তরে হেনস্থা) থেকে মুক্তি পেলেন রূপান্তরকামীরা। শারীরিক পরীক্ষার ওই প্রথা তুলে দিল কেন্দ্র। নয়া যে আইন চালু করল কেন্দ্র, তাতে শুধু হলফনামা দিলেই চলবে। এর ফলে বহু রূপান্তরকামী সমাজ ও ব্যক্তিজীবনে অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রের সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রক ট্র্যান্সজেন্ডার পার্সন্স (প্রোটেকশন অব রাইটস) রুলস ২০২০ প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, ‘লিঙ্গ পরিবর্তনের জন্য জেলাশাসককে আবেদন করবেন রূপান্তরকামীরা। তার সঙ্গে লিঙ্গের বিষয়ে হলফনামা দিতে হবে। জেলাশাসক সেটা পরিবর্তন করতে পারবেন। কিন্তু শারীরিক পরীক্ষা ছাড়াই লিঙ্গের সার্টিফিকেট বা শংসাপত্র দিতে হবে’। ওই আইনে বলা হয়েছে, অনলাইন পদ্ধতি চালু না হওয়া পর্যন্ত শারীরিক ভাবে জেলাশাসকের কাছে গিয়ে আবেদন জমা দিতে হবে আবেদনকারীকে। সন্তানের হয়ে তাঁর মা-বাবাও আবেদন করতে পারবেন।
রূপান্তরকামীদের সরকারি ভাবে নথিবদ্ধ করতে প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল কয়েক বছর আগে। নয়া আইন চালু হওয়ার আগে পর্যন্ত যাঁরা ইতিমধ্যেই লিঙ্গ পরিবর্তন করে মহিলা, পুরুষ বা রূপান্তরকামীর শংসাপত্র পেয়েছেন, তাঁদের আর নতুন করে আবেদন করতে হবে না। এ বিষয়ে রাজ্য সরকারগুলিকেও রূপান্তরকামীদের কল্যাণে বোর্ড গঠনের নির্দেশিকা পাঠিয়েছে কেন্দ্র। তাঁদের দাবিদাওয়া মেটানোর পাশাপাশি সরকার থেকে কী ধরনের সাহায্য বা অনুদান তাঁরা পেতে পারেন, সেই সব বিষয় দেখভালের কাজ করবে এই সব বোর্ড। এ ছাড়া তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, সামাজিক নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য সচেতনতা-সহ যাবতীয় বিষয়ে জানার জন্য রূপান্তরকামীদের সাক্ষাৎকারের বন্দোবস্ত করার এক্তিয়ারও দেওয়া হয়েছে ওই বোর্ডের।
আরও পড়ুন: মোবাইল, আয়কর থেকে মিষ্টি, ১০ নয়া নিয়ম চালু হল অক্টোবর থেকে
আরও পড়ুন: পুজোয় ২০০ স্পেশাল ট্রেন, প্রস্তুতি শুরু রেলের
রূপান্তরকামীদের জন্য নয়া আইনের খসড়া প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল জুলাইয়ে। সেই খসড়ার উপরে মতামত বা পরামর্শ চাওয়া হয়েছিল সাধারণ মানুষ এবং সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে। মন্ত্রক সূত্রে খবর, জেলাশাসকের কাছে শারীরিক পরীক্ষা দেওয়া নিয়ে তীব্র আপত্তি উঠেছে রূপান্তরকামীদের মধ্য থেকে। সেই কারণেই শেষ পর্যন্ত ওই অংশ পরিবর্তন করে নতুন আইন কার্যকর করেছে কেন্দ্র।