হিমাচলে জল-প্রলয়। ছবি: পিটিআই।
টানা কয়েক দিন ধরে বৃষ্টিতে এমনিতেই ঘুম উড়ে গিয়েছিল বাসিন্দাদের। প্রতি মুহূর্তে আতঙ্ক বাড়ছিল, এই বুঝি হড়পা বান নেমে এসে সব লন্ডভন্ড করে দিয়ে যায়! নদীর জলস্তর বাড়ছিল। তার সঙ্গে আরও একটা আতঙ্ক চেপে বসেছিল হিমাচলের ছোট শহর পান্ডোর বাসিন্দাদের মনে। যদি বাঁধের ফ্লাডগেট খুলে দেওয়া হয়, তা হলে তো আরও বিপত্তি।
হিমাচলের চার দিকে এমনিতেই জল-প্রলয় চলছে। কোথাও ধস, কোথাও হড়পা বান, কোথাও নদী দুকূল ছাপিয়ে লোকালয়ের মধ্যে দিয়ে বইছে। হিমাচলের সর্বত্র এই ছবি। কিন্তু তার মধ্যেও ব্যতিক্রম ছিল পান্ডো শহর। তবে বেশি ক্ষণ সুরক্ষিত থাকল না এই পাহাড়ি শহরটি। বরং অন্য শহরগুলির তুলনায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠল এক রাতেই।
টানা বৃষ্টিতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় কোথাও গোড়ালি, কোথাও হাঁটুসমান জল ছিল। এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু রবিবারের রাতে সব বদলে গেল এক লহমায়। মান্ডি জেলায় বিতস্তা নদীর উপর পং বাঁধ থেকে ১১২ কিলোমিটার উপরের দিকে পান্ডো ডাইভারসন বাঁধ। বৃষ্টির অতিরিক্ত জল এই বাঁধ থেকে পং বাঁধের দিকে ছাড়া হয়। অথবা শতদ্রু নদীর দিকে সেই জল ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টির জেরে পান্ডো বাঁধের উপর চাপ বাড়ে। ফলে জল ছেড়ে দেওয়া হয়। সেই জল পং বাঁধে পৌঁছতে বেশি সময় নেয়নি। পং বাঁধে চাপ বেড়ে যাওয়ায় ফ্লাডগেট খুলে দেওয়া হয়। পং বাঁধের কাছের শহরই পান্ডো। রবিবার রাতে সেই জল ছাড়ায় ধীরে ধীরে জলের তলায় যেতে শুরু করে।
শহরবাসীদের অভিযোগ, তাঁদের আগাম না জানিয়েই জল ছাড়া হয়েছে। ফলে কোনও রকমে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটতে হয়েছে। এক বাসিন্দা জানান, প্রথমে একটু একটু করে জল বাড়ছিল। তার পর আচমকাই জলস্তর বেড়ে যায়। হিমাচলের এই শহর ধীরে ধীরে ন’ফুট জলের তলায় চলে যায়। হিমাচল প্রদেশে বৃষ্টি এবং বন্যা পরিস্থিতির কারণে ইতিমধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৮০ জনের।