সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে কিছু শহরে ভর্তুকি দিয়ে টোম্যাটো বিক্রি করতে চলেছে কেন্দ্র। — ফাইল চিত্র।
ক্রমেই দাম বাড়ছে টোম্যাটোর। দেশের অনেক শহরেই এক কেজি টোম্যাটোর দাম ২০০ টাকার গণ্ডি ছুঁয়েছে। আশঙ্কা, পরের সপ্তাহে দেশের কোথাও কোথাও টোম্যাটোর দাম ৩০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করল কেন্দ্র। দেশের রাজধানী দিল্লি, এনসিআর, পটনা, লখনউ-সহ কয়েকটি বড় শহরে ভর্তুকি দিয়ে টোম্যাটো বিক্রি শুরু করতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এক কেজি টমেটোর দাম ৯০ টাকা। দিল্লিতে শুক্রবারেই শুরু হয়েছে সেই উদ্যোগ। প্রতি গ্রাহক ভর্তুকি দেওয়া দামে ২ কেজির বেশি টোম্যাটো কিনতে পারবেন না।
অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্নাটক, মহারাষ্ট্রের মাণ্ডি থেকে ওই টোম্যাটো কিনে এনে দিল্লি-সহ দেশের বড় শহরে বিক্রির ব্যবস্থা করেছে কেন্দ্র। বুধবার এই নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। শুক্রবার দিল্লির কয়েকটি কেন্দ্রে সকাল ১১টা থেকে তা চালু হল। ১১টি জেলাতে ৩০টি ভ্যান নিয়ে ঘুরে ঘুরে টোম্যাটো বিক্রি করা হবে বলে জানিয়েছে জাতীয় সমবায় গ্রাহক ফেডারেশন (এনসিসিএফ)। নয়ডায় রজনীগন্ধা চকের এনসিসিএফ দফতরে টোম্যাটো বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে। গ্রেটার নয়ডা এবং অন্যান্য শহরে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করা হবে টোম্যাটো।
এনসিসিএফের তরফে জানানো হয়েছে, প্রথম দিন, শুক্রবার ১৭ হাজার কেজি টোম্যাটো বিক্রি করা হবে। সপ্তাহান্তে লখনউ, কানপুর, জয়পুর-সহ আরও কিছু শহরে ভর্তুকি দিয়ে টোম্যাটো বিক্রি করা হবে। শনিবার ২০ হাজার কেজি টোম্যাটো বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে এনসিএফের। ক্রমে তা বাড়িয়ে দিনে ৪০ হাজার কেজি বিক্রির পরিকল্পনা করেছে এনসিএফ।
জুনের শুরুতেও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গড়ে ৪০ টাকা কেজি দরে টোম্যাটো বিক্রি হয়েছে। তার পর ক্রমেই দাম বেড়েছে টোম্যাটোর। ১০০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। কোথাও কোথাও ২২৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গত বুধবার কৃষি বিপণন সংস্থা এনসিএফ এবং জাতীয় কৃষি সমবায় বিপণন ফেডারেশন (এনএফইডি)-কে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেয় কেন্দ্র। বাজার থেকে টোম্যাটো কিনে ভর্তুকি দিয়ে তা বিক্রি করতে বলা হয়। এনসিসিএফের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আনিস জোসেফ জানিয়েছেন, ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে টোম্যাটো কিনে তা ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। ক্ষতির টাকা মেটাবে কেন্দ্রীয় সরকার।
টোম্যাটোর দাম বৃদ্ধির জন্য বর্ষাকে দায়ী করেছে কেন্দ্র। এমনিতে বৃষ্টির কারণে দেশে জুলাই-আগস্ট এবং অক্টোবর-নভেম্বরে টোম্যাটোর উৎপাদন কম হয়। তারই প্রভাব পড়ছে দামে। ন্যাশনাল কমোডিটিস ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেড-এর সিইও সঞ্জয় গুপ্ত একটি সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, আগামী কয়েক সপ্তাহ টোম্যাটোর দাম বৃদ্ধি পেতে থাকবে। ২ মাসের আগে কমবে না। কৃষি বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, প্রতি কেজি টোম্যাটোর দাম ৩০০ টাকাও হতে পারে। টোম্যাটো মূলত চাষ হয় অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশে, গুজরাত, তেলঙ্গানা, বিহার, ছত্তীসগঢ়, পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, হরিয়ানায়। এ সব রাজ্যে বৃষ্টির কারণে টোম্যাটোর চাষ ধাক্কা খেয়েছে। তা ছাড়া টোম্যাটো বেশি দিন সংরক্ষণ করা যায় না, খুব গরম, বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যায়। সে কারণেও জোগান ধাক্কা খায়। তারই প্রভাব পড়ে দামে।