রাহুল-বিরোধী সুর রুখতে হাতিয়ার রাজীব আবেগ

দলের মধ্যে শোনা যাচ্ছে বেসুর। ফের পরোক্ষে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে রাহুল গাঁধীর নেতৃত্ব নিয়ে। তাই রাহুলের ‘ব্যর্থতা’ ঢেকে ঘুরে দাঁড়াতে রাজীব-আবেগকে অস্ত্র করার সিদ্ধান্ত নিলেন সনিয়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৬ ০৩:৩০
Share:

দলের মধ্যে শোনা যাচ্ছে বেসুর। ফের পরোক্ষে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে রাহুল গাঁধীর নেতৃত্ব নিয়ে। তাই রাহুলের ‘ব্যর্থতা’ ঢেকে ঘুরে দাঁড়াতে রাজীব-আবেগকে অস্ত্র করার সিদ্ধান্ত নিলেন সনিয়া।

Advertisement

আগামিকাল রাজীব গাঁধীর মৃত্যুবার্ষিকী। পঁচিশ বছর আগে এ দিনই তামিলনাড়ুর শ্রীপেরুমবুদুরে এক আত্মঘাতী হামলায় প্রাণ হারান তিনি। সেই উপলক্ষে প্রতিবারই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কংগ্রেস। কিন্তু এ বার নজিরবিহীন ভাবে রাজীব গাঁধীর স্মারক বীরভূমিতে রাত পৌনে দশটায় এক অনুষ্ঠান করা হবে। ঠিক ওই সময়েই নিহত হয়েছিলেন রাজীব। সকালেও প্রথামাফিক বীরভূমিতে অনুষ্ঠান হবে। ইন্দিরা গাঁধী স্টেডিয়ামে দলের যুব সংগঠনের আয়োজিত অনুষ্ঠানেও থাকবেন সনিয়া-রাহুল। হবে রক্তদান শিবির।

অসম ও কেরল ফস্কে গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ ও তামিলনাড়ুতেও জোট জেতেনি। ফলে দলের কিছু নেতা বলতে শুরু করেছেন লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পরে সংগঠনে যে রদবদলের প্রয়োজন ছিল তা হয়নি। দিগ্বিজয় সিংহের কথায়, ‘‘দলে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন।’’ পরোক্ষে প্রিয়ঙ্কাকে রাজনীতিতে আনার কথাও বলেছেন তিনি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে বদলের কথা বলছেন শশী তারুর, নটবর সিংহরাও। জবাবে অবশ্য সনিয়া-ঘনিষ্ঠ পি সি চাকো আজ বলেন, ‘‘দিগ্বিজয় সিংহ প্রকাশ্যে না বলে দলের মধ্যে বলতে পারতেন। চিকিৎসকেরা প্রথমেই অস্ত্রোপচার করেন না। প্রথমে অ্যান্টি বায়োটিক দেওয়া হয়।’’ চাকোর আশ্বাস, শীঘ্রই পাঁচ রাজ্যের নির্বাচন নিয়ে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক বসবে। সেখানেই যাবতীয় বিষয় পর্যালোচনা করা হবে। সনিয়া শিবির এ দিন স্পষ্ট করে দিয়েছে, হারের দায় রাহুলের উপরে বর্তায় না। তাঁকে সভাপতি করার সিদ্ধান্ত হয়েই রয়েছে।

Advertisement

সনিয়া গাঁধীকে শুধু স্থির করতে হবে, সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করার জন্য ‘উপযুক্ত’ সময় কোনটি। ফলে দলের মধ্যে থেকে রাহুলের নেতৃত্ব নিয়ে যাই প্রশ্ন উঠুক না কেন, তাঁকে বাদ দিয়ে অন্য কিছু ভাবার কোনও প্রশ্নই ওঠে না।

দলীয় সূত্রে খবর, বিক্ষুব্ধ স্বরকে দমিয়ে দেওয়ার জন্যই রাজীব-আবেগকে আঁকড়ে ধরেছেন সনিয়া। তবে তাতে কতটা কাজ হবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে দলের অন্দরেই। কংগ্রেসের নেতৃত্ব বিতর্ক এ দিন আরও উস্কে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। নিজের ব্লগে তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘কংগ্রেস কী ভাবে অস্ত্রোপচার করবে? পরিবারতন্ত্র ছেড়ে কি কংগ্রেস এক ঝাঁক নতুন নেতার দল হয়ে উঠতে পারবে? কংগ্রেস কি বুঝতে পারছে না, তারা ধীরে ধীরে প্রান্তিক হয়ে যাচ্ছে? ২০১৯ সালে বিজেপির মোকাবিলায় তারা কি মূল বিরোধী দল থাকতে পারবে?’’ ঘরোয়া আলোচনায় কংগ্রেস নেতারা মানছেন, এই প্রশ্নগুলি তাঁদের অনেকের মনেও রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement