সংগৃহীত চিত্র।
পূজোর ছুটিতে শিক্ষকদের আর টানা ছুটি নয়। প্রয়োজন হলে লক্ষ্মী পুজো থেকে কালীপুজোর মধ্যে অনলাইনে ক্লাস করাতে পারে স্কুলগুলি। প্রধান শিক্ষকদের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানাল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “এই ক্লাস বাধ্যতামূলক নয়। তবে লক্ষ্মী পুজো থেকে কালীপুজোর মধ্যে স্কুলগুলি মনে করলে একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ক্লাস করাতে পারে। যাতে দ্বিতীয় সিমেস্টারের আগে পড়ুয়াদের সিলেবাস শেষ করা যায়।”
শিক্ষা সংসদের সূত্রের খবর অনুযায়ী, এ বছর একাদশে নয়া পদ্ধতিতে শুরু হয়েছে পঠন-পাঠন। সিলেবাসেরও পরিবর্তন করা হয়েছে আমূল। প্রথমদিকে সিমেস্টার পদ্ধতির উপযোগী বই আসতেও অনেকটা সময় লেগেছে। তার ফলে একাদশের প্রথম সিমেস্টারের সিলেবাস সম্পূর্ণ করতে পারেনি বহু স্কুল। তার উপর পুজোর পরই দ্বিতীয় সিমেস্টারের ক্লাস শুরু হয়ে যাবে। তার আগে পড়ুয়াদের ভিত পোক্ত রাখতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নারায়ণ দাস বাঙ্গুর ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বলেন, “নতুন পদ্ধতি ও নয়া সিলেবাসে এ বছর পরীক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।। বছরে দু’বার করে পরীক্ষা। লম্বা ছুটি থাকলে পড়ুয়াদের পড়াশোনার মধ্যে ফিরে আসতে অনেকটাই সময় লাগে। তাই আমরা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি।”
তবে ইতিমধ্যে বেশকিছু স্কুল জানাচ্ছে তারা লক্ষ্মী পূজোর পর থেকেই অনলাইনে ক্লাস করানোর সিদ্ধান্ত আগে থেকেই গ্রহণ করেছে। তার প্রধান কারণ হচ্ছে, এক দিকে সিমেস্টার পদ্ধতি ও অন্য দিকে পুরনো সিলেবাসের টেস্ট পরীক্ষা রয়েছে পুজোর পরেই। একাদশ শ্রেণিরও সিলেবাসও সম্পূর্ণ শেষ করা সম্ভব হয়নি। সেগুলি যাতে পড়ুয়ারা ঝালিয়ে নিতে পারে এবং পড়াশোনার মধ্যে থাকতে পারে, তাই অনলাইনে ক্লাসের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
বেশ কিছু স্কুলের আবার বক্তব্য, শিক্ষা সংসদ অনুরোধ করেছে প্রধান শিক্ষকদের। যে হেতু বিজ্ঞপ্তি মধ্যশিক্ষা পর্ষদ বা শিক্ষা দফতরের তরফ থেকে দেওয়া হয়নি। তা বাস্তবায়ন করা যথেষ্ট কঠিন। বহু শিক্ষক রয়েছেন যাঁদের অনলাইন ক্লাসের প্রতি অনীহা রয়েছে।
কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, “শিক্ষা সংসদের এই নির্দেশের পর প্রধান শিক্ষকেরা শিক্ষকদের অনুরোধ করতে পারেন। পুরো বিষয়টা নির্ভর করবে তাঁদের উপর। যেনহেতু শিক্ষা সংসদ দ্বারা স্কুলগুলির নিয়ন্ত্রিত হয় না। তাই বাস্তবায়ন করা যথেষ্ট কঠিন।”
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফ থেকে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে ২১ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর মধ্যে অনলাইনে এই ক্লাস করাতে পারে স্কুলগুলি।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “ছুটিতে অনলাইন ক্লাসের ব্যাপারে শিক্ষা সংসদ যে নোটিস দিয়েছে তা বাধ্যতামূলক নয়। এটা পুরো বোঝাপড়ার ব্যাপার। যদি কোনও স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা রাজি হন তাহলে তাঁরা ক্লাস করতে পারেন, আর রাজি না হলে ক্লাস হবে না। আমরা অনলাইন ক্লাসের পক্ষে নয়, আর সেই পরিস্থিতিও এখন নেই। তবে কেউ চাইলে করতে পারে।”