—প্রতীকী ছবি।
সংসদের পুরনো ভবনে শেষ দিনে, লোকসভা ও রাজ্যসভায় মোদী সরকারকে আক্রমণ করল তৃণমূল কংগ্রেস। লোকসভায় দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আজ ধর্মনিরপেক্ষতা এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা বড় বিপদের মুখে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রীয় অবস্থা ভেঙে পড়ার সবচেয়ে বড় শিকার পশ্চিমবঙ্গ।”
অন্য দিকে, রাজ্যসভায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন তৃণমূলের নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। তাঁর অভিযোগ, বক্তৃতায় সময় ছেঁটে চেয়ারম্যান তড়িঘড়ি অধিবেশন মুলতুবি করে দিয়েছেন। ডেরেকের কথায়, “ওরা আমার কণ্ঠরোধ করেছে। বলতে দেয়নি। ১৮ মিনিট নির্ধারিত ছিল আমার জন্য, যা ছেঁটে করে দেওয়া হয়েছে ১২ মিনিট।” প্রতিবাদে তিনি বক্তৃতার শেষ তিন মিনিট সংসদ চত্বরে গান্ধী মূর্তির সামনে গিয়ে শেষ করেন।
আজ লোকসভায় সুদীপ সরাসরি অভিযোগ তুলেছেন, প্রধানমন্ত্রী সংসদে প্রশ্নের উত্তর দেন না। তাঁর কথায়, “এর আগে যত প্রধানমন্ত্রী দেখেছি, তাঁরা সাংসদদের প্রশ্নে জবাব দিতেন। কিন্তু গত দশ বছর ধরে কোনও প্রশ্নের উত্তর প্রধানমন্ত্রী দেননি। আশা করব, সংসদের নতুন ভবনে তা দেওয়া হবে।” তাঁর বক্তব্য, “সংসদের ভিতরে সৌভ্রাতৃত্বের পরিবেশ নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। আমি শুনছিলাম, প্রধানমন্ত্রী আশা করছেন, বিরোধীরা হাততালি দেবে। কিন্তু সংসদে সেই পরিবেশই তো নষ্ট হয়েছে। যা আমাদের গভীর উদ্বেগের কারণ।” তাঁর অভিযোগ, দেশে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্যের বন্ধন অন্তর্হিত হচ্ছে। সংসদে বিল বিতর্ক ছাড়াই একতরফা ভাবে পাশ হয়ে যায়, এই অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘‘একটি দলের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা জন্ম দিচ্ছে ঔদ্ধত্যের। এটা কাঙ্ক্ষিত নয়। বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে।”
একই অভিযোগে অন্য কক্ষে সরব ছিলেন ডেরেক। গান্ধী মূর্তির সামনে তিনি বলেন, “আমাকে বক্তৃতা দিতে দেওয়া হল না। পুরনো ভবনের শেষ দিনের সর্বশেষ বক্তৃতা ছিল এটা। অত্যন্ত দুঃখের দিন আজ।” ডেরেক বলেন, আমাকে আমার ভারত ফিরিয়ে দেওয়া হোক যেখানে নিজের কথা বলতে পারব, নিজের ইচ্ছেমতো খেতে পারব। যেখানে বৈচিত্র্য এবং ঐক্য হবে জীবনের স্বাভাবিক ধর্ম।” একেবারে শেষে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা উদ্ধৃত করে ডেরেক বলেন, “চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির।”