Congress

TMC: কংগ্রেসে ‘অ্যালার্জি’, স্ট্যালিনের ডাকে সাড়া দিল না তৃণমূল

আজ দিল্লিতে তাঁর দলের নতুন দফতর উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে সমস্ত রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ডিএমকে প্রধান, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২২ ০৮:৪০
Share:

ডিএমকে-র দফতর উদ্বোধনের পরে সনিয়া গান্ধী, অখিলেশ যাদব, এম কে স্ট্যালিন এবং অন্য বিরোধী নেতারা। শনিবার নয়াদিল্লিতে। নিজস্ব চিত্র।

একই অনুষ্ঠানে হাজির সনিয়া গান্ধী, অখিলেশ যাদব। দিল্লিতে ডিএমকে-র দফতর উদ্বোধনে এম কে স্ট্যালিনের আমন্ত্রণে হাজির সীতারাম ইয়েচুরি, ডি রাজাও। কিন্তু স্ট্যালিনের আমন্ত্রণ সত্ত্বেও তৃণমূলের প্রথম সারির নেতারা এই অনুষ্ঠানে গরহাজির রইলেন। বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে সংযোগের থেকেও বড় হয়ে উঠল বিরোধী জোটে কংগ্রেসের নেতৃত্ব নিয়ে তৃণমূল শীর্ষনেতৃত্বের ‘অ্যালার্জি’। বৃহস্পতিবার সংসদে গিয়ে সনিয়ার সঙ্গে দেখা করেছিলেন স্ট্যালিন। সূত্রের খবর, সেই ছবি দেখেই তৃণমূলের ‘অ্যালার্জি’ আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।

Advertisement

আজ দিল্লিতে তাঁর দলের নতুন দফতর উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে সমস্ত রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ডিএমকে প্রধান, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন। জাতীয় রাজনীতিতে নিজের গুরুত্বের কথা জানান দিয়ে কে করুণানিধির পুত্র বিজেপি-বিরোধী দলগুলির এককাট্টা হওয়ার মঞ্চও তৈরি করেছিলেন। অনুষ্ঠানের আগেই স্ট্যালিন বলেছিলেন, সমস্ত বিজেপি-বিরোধী আঞ্চলিক দলকে কংগ্রেস ও বামেদের সঙ্গে হাত মেলাতে হবে, যাতে বিজেপির বিরুদ্ধে জোট তৈরি করা যায়।

ডিএমকে-র অনুষ্ঠানে তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভা এবং রাজ্যসভার নেতা যথাক্রমে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও ডেরেক ’ও ব্রায়েনকে নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল। কিন্তু দু’জনের কেউই উপস্থিত ছিলেন না অনুষ্ঠানে। সুদীপ বা ডেরেক না যাওয়ায় সৌজন্যের খাতিরে দলের লোকসভা সাংসদ অপরূপা পোদ্দারকে পাঠানো হয়েছিল।

Advertisement

বিরোধীদের সঙ্গে সংযোগ করার জন্য এই মঞ্চটিকে ব্যবহার না করে, কেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব ছেড়ে দিলেন?

তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সনিয়া গান্ধী। বিজেপি-বিরোধী জোটের যে ডাক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী নেতা এবং অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের লেখা চিঠিতে দিয়েছেন, তার সলতে পাকানোর কাজ দিল্লিতে যত কম হয় ততই ভাল। তৃণমূল চাইছে, বিরোধী নেতাদের বৈঠক মুম্বইয়ে হওয়া শ্রেয়। সে ক্ষেত্রে এনসিপি-র শীর্ষ নেতা শরদ পওয়ার থাকবেন আয়োজকের ভূমিকায়। দিল্লিতে ওই বৈঠক করা হলে, কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর নেতৃত্ব অবধারিত ভাবে সামনে আসবে বলেই তৃণমূল মনে করছে। বিরোধী জোট যে কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে হবে না— সেই রাজনৈতিক বাস্তবতা তৃণমূল অস্বীকার করছে না। কিন্তু সেই জোটের নেতৃত্ব আগেভাগেই সনিয়া বা রাহুল গান্ধীর হাতে তুলে দিতে রীতিমতো ‘অ্যালার্জি’ রয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বের।

কংগ্রেসকে নিয়ে তৃণমূলের অবস্থানের সঙ্গে অবশ্য ডিএমকে নেতা স্ট্যালিন একমত নন। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার যুক্তি দিয়েছেন, কংগ্রেসের অবক্ষয়ের ফলে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আঞ্চলিক দলগুলিকেই নেতৃত্ব দিতে হবে। কিন্তু স্ট্যালিনের মতে, এই যুক্তি কিছু রাজ্যে সঠিক হতে পারে। কিন্তু অনেক রাজ্যেই বিভ্রান্তিকর। তামিলনাড়ুতে এডিএমকে-বিজেপি জোটকে হারিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসা স্ট্যালিনের মতে, আঞ্চলিক দলগুলিকে কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলাতে হবে। রাজ্যের রাজনীতির সঙ্গে জাতীয় রাজনীতির কোনও ফারাক নেই। জাতীয় রাজনীতি আসলে রাজ্য রাজনীতিরই সংমিশ্রণ।

তৃণমূলের যুক্তি, ডিএমকে-র দফতর উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে বিজেপি ও তার শরিক দলগুলিকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। অনুপস্থিতির সেটাও কারণ। তাছাড়া, ডেরেক
আজ গোয়ায় গিয়েছিলেন দলের বৈঠকে যোগ দিতে। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যস্ত বাংলায় উপনির্বাচনের কাজে। ডিএমকে-র লোকসভার নেতা টি আর বালুকে চিঠি লিখে অনুষ্ঠানে থাকতে না পারার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন সুদীপ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement