তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
কাটমানি ও সন্ত্রাস প্রসঙ্গে গত কাল লোকসভায় খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেছিল বিজেপি। আজ জবাব দিলেন তৃণমূল সাংসদেরা।
এ দিন প্রশ্নোত্তর পর্বের পরে জিরো আওয়ার শুরুর ঠিক মুখে লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গত কাল জিরো আওয়ারে বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, কাটমানি এক ধরনের ঘুষ। তাঁর বক্তব্য, ২৫ শতাংশ নিয়েছে দল আর ৭৫ শতাংশ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আছে। এই ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ সংসদের রেকর্ড থেকে অবিলম্বে বাদ দেওয়া হোক। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী সংসদে নেই। কিন্তু তাঁকে নিয়ে তাঁর পিছনে মিথ্যাভাষণ করা হচ্ছে। উনি দেশের সবচেয়ে সৎ এবং সেরা মুখ্যমন্ত্রী।’’ এখানেই না-থেমে সুদীপবাবু দাবি করেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে যদি আলোচনা করা হয়, তা হলে উত্তরপ্রদেশ এবং বিহার নিয়েও করতে হবে।’’
সুদীপবাবুর মন্তব্যের পরেই চিৎকার করে ওঠে বিজেপি বেঞ্চ। পাল্টা তৃণমূল বেঞ্চ থেকে উঠে দাঁড়ান কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। পাল্লা দিয়ে প্রতিবাদ করেন মালা রায়, শিশির অধিকারী, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো তৃণমূল সাংসদেরাও। স্পিকার বলেন, ‘‘আপনারা সংসদকে বাংলার বিধানসভায় পরিণত করবেন না।’’
স্পিকারের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আজ সংসদে রাজ্য নিয়ে ফের সরব হয়েছেন বিজেপির সাংসদ অর্জুন সিংহ এবং লকেট চট্টোপাধ্যায়। অর্জুনের কথায়, ‘‘জাল নোট এবং মাদক ঢুকে পশ্চিমবঙ্গের যুবাশক্তিকে নষ্ট করছে।’’ লকেট বলেন, ‘‘জয় শ্রীরাম উন্নয়ন, সুশাসন এবং বিকাশের আহ্বান। গোটা দেশের মানুষ জয় শ্রীরাম ধ্বনিকে আপন করেছেন। অথচ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী জয় শ্রীরাম শুনলেই গাড়ি থেকে নেমে আসছেন।’’
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যসভাতেও কেন্দ্রের শাসক দলকে চেপে ধরে তৃণমূল। গত তিন বছরে গোটা দেশে অপরাধের বিষয়ে তৃণমূল সাংসদ মানস ভুঁইয়ার করা প্রশ্নের লিখিত জবাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি জানিয়েছেন, ২০১৭ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত অপরাধের কোনও পরিসংখ্যান ‘ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড বুরো’র কাছে নেই। মানসবাবুর প্রশ্ন, তা হলে বিজেপি সাংসদেরা কোন তথ্যের ভিত্তিতে বলছেন পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক হিংসা সবচেয়ে বেশি হয়েছে? তাঁর অভিযোগ, ‘‘আসল কথা হল ওই তথ্য সামনে এলে দেশ জুড়ে কৃষক আত্ম্যহত্যা এবং বিজেপি নেতাদের পিটিয়ে হত্যার তথ্যও সামনে এসে যেত।’’