সংসদে সরব সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি পিটিআই।
কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেট নিয়ে সংসদের দু’টি কক্ষেই সরব হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, রাজ্যগুলির জন্য ২০২৩ পর্যন্ত ১ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র। কিন্তু এর দিশা নির্দেশিকা কোথায়? কোন রাজ্যকে কত টাকা দেওয়া হবে? তাঁর বক্তব্য, এ ক্ষেত্রে সরকারকে মনে রাখতে হবে, দেশের পূর্বাঞ্চল সর্বদাই আঞ্চলিক বৈষম্যের শিকার। সুদীপ বলেন, “দেশে মহারত্ন, নবরত্ন, সবই কি বেচে দিতে চাইছে কেন্দ্র? আমরা এর ঘোরতর বিরোধী। তেলের দাম আকাশছোঁয়া। এর কোনও সুরাহা আছে কি না, জানতে চাইলে কোনও উত্তর পাওয়া যায় না।”
আজ রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদ জহর সরকার বলেন, “সরকার নিজেই বলছে, অতিমারির সময়ে ৮৫ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হয়েছে। তার মানে কেন্দ্র নিজেই স্বীকার করছে যে, ১৩০ কোটির দেশে এখনও ৮৫ কোটি এমন মানুষ রয়ে গিয়েছেন, যাঁদের খাবার কেনারও সামর্থ্য নেই।” সরকার জীবন বিমা নিগমকে দুর্বল করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রসঙ্গ এনেছেন জহর। তাঁর কথায়, “আমি ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পের প্রশ্নে কিছুটা আবেগপ্রবণ। কারণ ২০০৭ সালে আমি ছিলাম এই মন্ত্রকের প্রথম ডেভেলপমেন্ট কমিশনার। এখনও খবরাখবর রাখি। ক্ষুদ্র উদ্যোগপতিরা জানেন, কী ভাবে সঙ্কটের মোকাবিলা করতে হয়। কিন্তু কৃত্রিম ভাবে তৈরি করা সঙ্কটের মোকাবিলা কী ভাবে করতে হয়, সেটি তাঁরা জানেন না। সেই কৃত্রিম সঙ্কট হল, নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত। আগে এই ছোট ছোট উদ্যোগপতিরা ছিলেন একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের মেরুদণ্ডস্বরূপ। এখন আর তাঁদের দরকার হয় না। কারণ একটি রাস্তা দিয়েই বড় পুঁজি ঢুকছে।” জহরের অভিযোগ, বাজেটে দেওয়া অনেক পরিসংখ্যানই ‘বানানো’। বঙ্গের তৃণমূল সরকারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমাদের রাজ্য ভাল আর্থিক ফল করছে কারণ আমাদের সরকার সামাজিক সাম্যের পথে চলছে। তফসিলি জাতি, অন্যান্য উপজাতি ও জনজাতি, মহিলা এবং মুসলিমদের আস্থা অর্জন করে চলেছে।”
লোকসভায় বাজেট নিয়ে বলতে উঠে তৃণমূলের মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই বাজেট দেশজোড়া বেকারত্ব এবং মূল্যবৃদ্ধির মোকাবিলার প্রশ্নে কোনও আশার আলো দেখাতে পারল না। এই বাজেট জনবিরোধী বাজেট। জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান যোজনা বা মনরেগার মতো প্রকল্পে আর্থিক বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে এই বছরে। কোভিডের কারণে যখন দেশের গ্রামীণ কমর্সংস্থানের অবস্থা শোচনীয়, তখন এই প্রকল্পে বরাদ্দ করা হয়েছে ৭৩ হাজার কোটি টাকা, যা গত বারের তুলনায় পঁচিশ হাজার কোটি টাকা কম।’’ কল্যাণের দাবি, যে বিপুল সংখ্যক মানুষ বছরের পর বছর আয়কর ফাঁকি দিচ্ছেন, তাঁদের সংখ্যাটা প্রকাশ করা হোক।