—ফাইল চিত্র।
সংসদের কার্যসূচি রাত ৯টার পর বদলে যাচ্ছে সংশোধিত কার্যসূচিতে। সাংসদেরা রাত ১০টায় বাড়ি ফিরে দেখছেন পরের দিনের আলোচ্য বিল পাল্টে গিয়েছে! বিষয়টি নিয়ে আজ সংসদের ভিতরে এবং লোকসভার বিষয় উপদেষ্টা কমিটিতে সরব হয়েছে তৃণমূল। তাদের অভিযোগ, এই ধরনের ঘটনা সংসদীয় গণতন্ত্রের পরিপন্থী।
কার্যসূচি বদল নিয়ে আজ লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায় অভিযোগ করেন। পরে লোকসভার বিষয় উপদেষ্টা কমিটিতে স্পিকারের সামনেও সরব হন সুদীপ।
গত দু’সপ্তাহ ধরে যে ভাবে সংসদে বিল পাশ করানো হচ্ছে, তা নিয়ে রাজ্যসভা এবং লোকসভায় ধারাবাহিক ভাবে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের অভিযোগ, গভীর রাতে গোপনে বিল আনা হচ্ছে। সাংসদদের সংশোধনী দেওয়ার সুযোগ তো দূরস্থান, ভাল করে কেউ বিষয়টি পড়তেও পারছেন না।
লোকসভায় সুদীপ বলেন, ‘‘চরম বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। আপনি (স্পিকার) যখন বিষয় উপদেষ্টা কমিটিতে কার্যসূচি দিচ্ছেন, সেটা রাত ৯টার পর পাল্টে দেওয়া হচ্ছে! আমাদের কোনও ধারণাই থাকছে না যে, পরের দিন কোন বিল আনা হচ্ছে।’’ ঘটনা হল, গত কাল যে কার্যসূচি স্পিকারের অফিস থেকে দেওয়া হয়েছিল, তাতে তিনটি বিল আলোচনা এবং পাশের কথা বলা হয়েছিল। তার মধ্যে ছিল ট্রাইবুনাল কমিশন, বাঁধ সুরক্ষা বিল। কিন্তু আজ সকালে দেখা যায়, দেউলিয়া বিধি বিল, পকসো এবং আরবিট্রেশন অ্যান্ড কনসিলিয়েশন বিল আনা হয়েছে।
কার্যসূচি বদলের সম্পর্কে সংসদীয় নিয়মবিধি তুলে ধরে সৌগতের বক্তব্য, ‘‘সংসদ কখনই কারও খেয়ালখুশি মতো চলতে পারে না। সংসদীয় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী অথবা সেক্রেটারি জেনারেল— কেউই তাঁদের ইচ্ছামাফিক সংসদীয় কার্যসূচি এ ভাবে বদলাতে পারেন না।’’
সূত্রের খবর, এই সমস্যার কথা বিষয় উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে স্পিকার ওম বিড়লার সামনে তোলেন সুদীপ। স্পিকার জানিয়েছেন, আগে থেকে যাতে কার্যসূচির চূড়ান্তরূপ সাংসদদের হাতে পৌঁছয়, তা তিনি দেখছেন।
সংসদের চলতি অধিবেশনের মেয়াদ বাড়িয়ে আগামী ৯ অগস্ট পর্যন্ত করার একটি সম্ভাবনা আজ সকাল থেকে ছড়িয়ে ছিল বিরোধী শিবিরে। সুদীপ জানান, ৯ অগস্ট ‘ভারত ছাড়ো আন্দোলন দিবস’ পালন করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তৃণমূলের সব সাংসদ রাজ্যে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন। ফলে সংসদে হাজির থাকা সমস্যার। বিল পাশের তাড়ায় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণী প্রস্তাবও কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের লোকসভার নেতা। সূত্রের খবর, আগামী অধিবেশন থেকে সপ্তাহে অন্তত একটি দৃষ্টি আকর্ষণী প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার কথা ভাবছেন স্পিকার।