সংসদে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। —পিটিআই।
সোমবার সংসদের দুই কক্ষেই বিরোধী সাংসদেরা গণহারে সাসপেন্ড হয়েছিলেন। মঙ্গলবারও সেই ধারা অব্যাহত। এর মধ্যেই নতুন সংসদ ভবনের মকরদ্বারের সামনে বিরোধী সাংসদদের অবস্থানে কার্যত আসর জমিয়ে দিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কল্যাণ যে ভঙ্গিতে কথা বলেছেন, শরীরী ভাষার প্রয়োগ ঘটিয়েছেন, তা দেখে অনেকের দাবি তিনি রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা দেশের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের কথা বলার ধরন, শরীরী ভাষা নকল করেছেন। কল্যাণের সেই ‘প্রতিভা’ দেখে কার্যত হেসে লুটোপুটি খেতে থাকেন বিভিন্ন দলের সাংসদেরা। দেখা যায় কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীও পকেট থেকে মোবাইল ফোন বার করে কল্যাণের ভিডিয়ো তুলছেন।
তবে বিজেপি ইতিমধ্যেই কল্যাণের এ হেন আচরণ নিয়ে সমালোচনায় নেমেছে। বিজেপি নেতা সুনীল দেওধর এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট করে লিখেছেন, ‘‘এই হল ‘ইন্ডিয়া’র আসল রূপ। সংসদ চত্বরে দেশের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়কে নকল করে ঠাট্টা করা হচ্ছে। আর প্রবীণ যুব নেতা রাহুল গান্ধী ভিডিয়ো বানিয়ে হাসছেন।’’ প্রসঙ্গত, যখন এই ঘটনা ঘটছে তখন সংসদে বিজেপি সংসদীয় দলের বৈঠক চলছিল। উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কল্যাণের এ হেন আচরণের খবর পৌঁছে গিয়েছে ধনখড়ের কানেও। প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছেন, ‘‘গোটাটাই হাস্যকর। এ জিনিস মেনে নেওয়া যায় না।’’
এই শীতকালীন অধিবেশনে কার্যত রেকর্ড হল লোকসভা এবং রাজ্যসভায়। আগেই ১৪ জন সাংসদ সাসপেন্ড হয়েছিলেন। সোমবার দুই কক্ষ মিলিয়ে মোট ৭৮ জনকে সাসপেন্ড করা হয়। মঙ্গলবার ফের প্রায় ৫০ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। প্রত্যেকেই বিরোধী শিবিরের সাংসদ। যাকে বিরোধীরা বলেছে ‘গণতন্ত্রের সাসপেনশন’।
সোমবার যখন কল্যাণ জগদীপ ধনখড়কে নকল করছেন, তখন সিঁড়ির ধাপে বসেছিলেন সাংসদেরা। তাতে ডিএমকে, আরজেডি, সিপিএম, তৃণমূল— ‘ইন্ডিয়া’ভুক্ত সব দলের সাংসদেরাই ছিলেন। কিছুটা পরে এসে পৌঁছন রাহুল গান্ধী। ধনখড়ের নাম করে নানাবিধ স্লোগান চলছিল সেই জমায়েতে। কিন্তু কল্যাণ অন্য ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। পাশে বসে থাকা অভিনেত্রী সাংসদ শতাব্দী রায়কে দেখা যায় বিস্ময় নিয়ে দেখছেন কল্যাণের দিকে। হাসছেন সৌগত রায়, ডি রাজা-সহ বাকিরা। হইহই বেধে যায় মকরদ্বারের সামনে। তবে বিজেপি ইতিমধ্যেই সমালোচনা শুরু করেছে। ফলে কল্যাণের নকল করা নতুন বিতর্কের জন্ম দেবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের অনেকে।