রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে আলাপচারিতায় তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডেরেক ও ব্রায়েন। ছবি: পিটিআই।
কোন রাজ্যের রসগোল্লা বেশি ভাল? রাষ্ট্রপতির নিজের রাজ্য ওড়িশার না-কি তৃণমূলের রাজ্য বাংলার! এ নিয়ে চিরন্তন লড়াই থাকলেও ওড়িশার ছানাপোড়ার শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে কিন্তু কোনও সন্দেহ নেই রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর। কলকাতায় গেলে অবশ্য তাঁকে মিষ্টি দই আর সন্দেশ চেখে দেখার পরামর্শ দিয়েছেন তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সব মিলিয়ে আজ বাংলার সব দলের সাংসদদের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির প্রাতরাশ বৈঠকটি মধুরেণ সমাপয়েৎ হল বলেই মনে করছে রাজধানীর রাজনৈতিক মহল।
দ্রৌপদী রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরে এই প্রথম বাংলার সাংসদদের সঙ্গে মিলিত হলেন। সংসদ অধিবেশন চলায় দিল্লিতেই রয়েছেন সাংসদেরা। আজ সকাল সাড়ে ৯টার সময় বাংলার তৃণমূল, বিজেপি ও কংগ্রেস সাংসদেরা রাষ্ট্রপতি ভবনে পৌঁছন। প্রবীণ সাংসদ হওয়ার কারণে সুদীপের সঙ্গে বসে পৃথক ভাবে একটু আলাপচারিতা করেন রাষ্ট্রপতি। পরে তাঁরা একই টেবিলে খেতে বসেন। টেবিলে ছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদবও। ওই চা-চক্রেই দ্রৌপদী জানান, তিনি আগামী ২৭ তারিখ দু’দিনের জন্য পশ্চিমবঙ্গে যাচ্ছেন। যাওয়ার কথা রয়েছে শান্তিনিকেতনেও। শুনে সুদীপ বলেন, তিনি নিজে বিশ্বভারতীর লোকসভা প্রেরিত কোর্ট কমিটির সদস্য। কিন্তু কোনও কর্মসূচিতেই তাঁকে ডাকা হয় না। অবশ্য অভিযোগ বা রাজনৈতিক আলোচনা এ দিন বাড়াননি সুদীপ। বরং বলেছেন, কলকাতায় গেলে অবশ্যই মিষ্টি দই খেতে। সেই সঙ্গে তাঁর মুখে বাংলা এবং ওড়িশার রসগোল্লার তুলনার কথা শুনে হেসে ফেলেন রাষ্ট্রপতি।
সূত্রের খবর, রাষ্ট্রপতি আজ চা-চক্রে বিদেশমন্ত্রীকে বলেন যে, অবসর পেলেই তিনি গোটা ভবনটি এবং তার পুরনো ছবিগুলি ঘুরে ঘুরে দেখেন। এ ভাবেই এক জায়গায় তিনি জয়শঙ্করের ছবিও দেখেছেন। বিদেশমন্ত্রী রাষ্ট্রপতিকে জানান যে, এক সময় তিনি রাষ্ট্রপতি ভবনে কাজ করতেন।
প্রাতরাশের সময় প্রথামাফিক হালকা স্বরে বাজছিল গানের সুর। সুদীপ পরে জানান, “এক-সময় বাজল, ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে’। রাষ্ট্রপতি সঙ্গে সঙ্গেই বললেন, এটি রবীন্দ্রনাথের গান। আমি তাঁকে বলি, কলকাতায় গিয়ে কোনও সুযোগে গানটির উল্লেখ করতে! উনি বলেন, গান্ধীজি এই গানটিকে খুবই মানতেন। এর পরে ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে’ গানটি শুনে তিনি বলেন, ভারতের বিভিন্ন ভাষায় এই গানের অনুবাদ হয়েছে।”
আজকের খাদ্যতালিকা ছিল নিরামিষ— ধোকলা, ইডলি, সম্বর, পুরি, চানা। মিষ্টি হিসাবে ছিল ওড়িশার ছানাপোড়া। নবরাত্রির জন্য শ্রমমন্ত্রী কিছু খাচ্ছেন না দেখে রাষ্ট্রপতি তাঁকে ছানাপোড়া খেতে অনুরোধ করেন।