পাঁচ দিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়টি নিয়েই চিঠি লিখেছিলেন প্রধানমন্ত্রীকে। তাতে তিনি বলেন, যুদ্ধের কারণে ইউক্রেন থেকে ফেরা ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে ব্যক্তিগত স্তরে কথা হয়েছে তাঁর। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিলকে চার-পাঁচটি পরামর্শও মমতা উল্লেখ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে।
—ফাইল চিত্র।
সপ্তাহের প্রথম দিনেই রাজ্যসভার অধিবেশনে কংগ্রেসকে বাইরে রেখে বিরোধী ঐক্যের ‘নিদর্শন’ তুলে ধরল তৃণমূল কংগ্রেস।
তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বে সোমবার মোট ন’টি বিরোধী দল আজ রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের কাছে ইউক্রেন ফেরত ভারতীয় ছাত্রদের ভবিষ্যৎ নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণী প্রস্তাব জমা দিয়েছে। জানা গিয়েছে, এই প্রস্তাবে তৃণমূল, এসপি, আপ, শিবসেনা এনসিপি, বাম, ডিএমকে, আরজেডি ও শিবসেনার মতো দলের সাংসদদের সই থাকলেও রাখা হয়নি কংগ্রেসকে। সূত্রের খবর, বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেসের কোনও রাজ্যসভার সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগই করা হয়নি। দলীয় সূত্রের খবর, বিজু জনতা দলকেও সঙ্গে থাকতে বলা হয়। কিন্তু তারা শামিল হতে চায়নি। টিআরএস এবং বিএসপি-র কোনও সাংসদ আজ রাজ্যসভায় ছিলেন না।
পাঁচ দিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়টি নিয়েই চিঠি লিখেছিলেন প্রধানমন্ত্রীকে। তাতে তিনি বলেন, যুদ্ধের কারণে ইউক্রেন থেকে ফেরা ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে ব্যক্তিগত স্তরে কথা হয়েছে তাঁর। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিলকে চার-পাঁচটি পরামর্শও মমতা উল্লেখ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে। সেই চিঠির ভিত্তিতেই আজ রাজ্যসভায় সমস্ত কর্মসূচি বন্ধ রেখে ফিরে আসা ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের পাঠক্রমের বিষয়টি দিয়ে আলোচনার জন্য রাজ্যসভার ২৬৭ ধারায় নোটিস দিয়েছিলেন তৃণমূলের সাংসদ শান্তনু সেন। সেই নোটিস গ্রাহ্য করেননি সভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু। এর পর রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে এই নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণী প্রস্তাব আনতে চান তাঁরা।
সূত্রের খবর, কংগ্রেসকে বাদ রেখে এর পর অন্যান্য বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে কথাবার্তা শুরু করেন তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতৃত্ব। তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, সংসদের আগামী দিনগুলির কর্মসূচিতে কংগ্রেসকে বাইরে রেখে নতুন বিরোধী ব্লক তৈরির এই তৎপরতা আরও বাড়বে। তার কারণ, আপ-এর রাজ্যসভা সদস্যের সংখ্যা আগামী মাসেই বেড়ে দাঁড়াবে তিন থেকে ১০-এ। এসপি থাকবে পাঁচ, তৃণমূলের ১৩। ডিএমকে-র ইতিমধ্যেই ১০ জন সাংসদ রয়েছেন রাজ্যসভায়। ফলে ডিএমকে, আপ, এসপি মিলিয়ে রাজ্যসভায় এই বিরোধী ব্লকের আসন সংখ্যা দাঁড়াবে ৩৮, যা আগামী দিনে কংগ্রেসের থেকে অনেকটাই বেশি। তৃণমূলের এক নেতার বক্তব্য, “কক্ষ সমন্বয়ের জন্য রাজ্যসভায় কংগ্রেসের কার সঙ্গেই বা আমরা কথা বলব! পি চিদম্বরম, আনন্দ শর্মা, জয়রাম রমেশের মতো প্রথম সারির নেতাদের সবারই মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে।” তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বিজেডি আজ বিজেপি-বিরোধী নৌকায় উঠতে প্রকাশ্যেই অস্বীকার করেছে। তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব অবশ্য বলছেন, মায়াবাতীর বিএসপি এবং বিজেডি-র কাছ থেকে অন্য রকম প্রত্যাশাও ছিল না।