INDIA Tamil Nadu

চেন্নাইয়ে তৃণমূল-সিপিএম পাশাপাশি ‘ইন্ডিয়া’র মঞ্চে, সনিয়া-সহ সকলের গলাতে ‘মোদী হটাও’য়ের চড়া সুর

তামিলনাড়ুর শাসকদল ডিএমকের মহিলা সংগঠন মহিলাদের অধিকার সংক্রান্ত একটি সম্মেলনের আয়োজন করেছিল। সেখানেই ডাকা হয়েছিল সর্বভারতীয় স্তরে বিজেপি-বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ভুক্ত দলের নেত্রীদের।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২৩ ২১:৪১
Share:

( বাঁ দিক থেকে) সুস্মিতা দেব, সুহাসিনী আলি, সনিয়া গান্ধী। —সংগৃহীত।

শুধু এক মঞ্চ নয়। একদম পাশাপাশি। শুধু পাশাপাশি নয়। চলল কানে কানে কথাও। মহালয়ার দিন ঠিক এ ভাবেই ফ্রেমে ধরা দিল তৃণমূল ও সিপিএম। রাজ্যসভায় তৃণমূলের সদ্য প্রাক্তন সাংসদ সুস্মিতা দেব এবং সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য সুহাসিনী আলিকে দেখা গেল এ ভাবেই। কখনও সুস্মিতার কানের কাছে গিয়ে কথা বলছেন প্রয়াত স্বাধীনতা সংগ্রামী লক্ষ্মী সায়গলের কন্যা সুহাসিনী। কখনও আবার উল্টোটা। স্থান, তামিলনাড়ুর রাজধানী চেন্নাই। তবে গোটা কর্মসূচির মধ্যমণি ছিলেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী। সেই মঞ্চ থেকে সনিয়া-সহ সকলেই ডাক দিলেন কেন্দ্র থেকে নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে হটানোর। সেই সুরও ছিল চড়া।

Advertisement

জাতীয় স্তরে বিজেপি-বিরোধী জোট গড়লেও বিভিন্ন রাজ্যের বাস্তবতায় তা ফলিত স্তরে কতটা কার্যকরী হবে তা নিয়ে ‘ইন্ডিয়া’র নেতৃত্বও সন্দিহান। তবে তামিলনাড়ুতে যে ‘ইন্ডিয়া’ সবচেয়ে কার্যকরী হতে পারে, তার রাজনৈতিক বাস্তবতা রয়েছে, তা প্রথমে লিখেছিল আনন্দবাজার অনলাইনই। শনিবার দেবীপক্ষের সূচনালগ্নে মহিলা অধিকার সম্মেলনের মধ্যে দিয়ে সেটাই ঘটে গেল। সেখানে পাশাপাশি রইল তৃণমূল, সিপিএম।

‘ইন্ডিয়া’র গত মুম্বই বৈঠকেই ঠিক হয়েছিল, রাজ্যে রাজ্যে তারা সমাবেশ-সভা করবে। প্রাথমিক ভাবে ভোটমুখী মধ্যপ্রদেশে তা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কমলনাথদের আপত্তিতে তা ভেস্তে যায়। তার পর আর ঐক্যবদ্ধ জোটের ছবি দেখা যায়নি কোনও রাজ্যেই। শনিবার তা বাস্তবায়িত হল তামিলভূমে। যা জোট গঠনের পর প্রথম। ডিএমকে-র মঞ্চ হয়ে উঠল ‘ইন্ডিয়া’র মঞ্চ।

Advertisement

(বাঁ দিক থেকে) পঞ্চমে সুহাসিনী আলি, ষষ্ঠ সুস্মিতা দেব। —ছবি পিটিআই।

তামিলনাড়ুর শাসকদল ডিএমকের মহিলা সংগঠন মহিলাদের অধিকার সংক্রান্ত একটি সম্মেলনের আয়োজন করেছিল। সেখানেই ডাকা হয়েছিল সর্বভারতীয় স্তরে বিজেপি-বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ভুক্ত দলের নেত্রীদের। তাঁরাই মূলত ভাষণ দেন এই কর্মসূচিতে। তবে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী তথা ডিএমকে প্রধান এমকে স্ট্যালিনও ছিলেন বক্তাদের মধ্যে অন্যতম।

চেন্নাইয়ের কর্মসূচিতে মহিলাদের ভিড়ও ছিল চোখে পড়ার মতো। সেখানে সনিয়া বলেন, ‘‘মহিলাদের অধিকার সুনিশ্চিত করতে ‘ইন্ডিয়া’র সব দল ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াই করবে। আমাদের জয়ও সুনিশ্চিত।’’ তৃণমূলের সুস্মিতা বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী সরকার ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ স্লোগান দিয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে কিছুই হয়নি। কেবল ব্যক্তি মোদীর প্রচার হয়েছে।’’ সংসদের বিশেষ অধিবেশন করে গত মাসেই মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ করিয়েছে কেন্দ্র। সুস্মিতা বলেন, ‘‘আসন পুনর্বিন্যাসের (ডিলিমিটেশন) পূর্ব শর্ত দিয়ে যে ভাবে মহিলাদের জন্য সংরক্ষণ বিল পাশ করিয়েছে সরকার, তা নিন্দনীয়।’’ প্রয়াত প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সন্তোষমোহন দেবের কন্যা সুস্মিতা এ-ও উল্লেখ করেন, আইন না-থাকলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তা কার্যকর করে দেখিয়েছেন। সিপিএমের পলিটব্যুরোর সদস্য সুহাসিনীর কথায়, ‘‘মনুবাদী দর্শন নিয়ে চলছে বলেই বিজেপি জমানায় মহিলাদের চরম দুর্দশার মধ্যে পড়তে হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, সংবামাধ্যমের স্বাধীনতা, ক্ষুধাসূচক— সবেতেই ভারত এগিয়ে চলেছে পিছনের দিকে।’’

চেন্নাইয়ের মঞ্চে ছিলেন সিপিআই নেত্রী অ্যানি রাজা, কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢড়া, এনসিপি নেত্রী সুপ্রিয়া সুলে, কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি, ডিএমকের কানিমোঝি-সহ সপা, আরজেডি, জেডিইউয়ের নেত্রীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement