তিরুনেলভেলি থেকে মালয়শিয়ায় গিয়ে বাবার সমাধি খুঁজে বার করলেন সমাজকর্মী। — নিজস্ব চিত্র।
বাবার কোনও স্মৃতি নেই পি তিরুমারানের। জন্মের ছ’মাস পরেই মারা গিয়েছিলেন তিনি। ৫৬ বছর বয়সে তিরুনেলভেলি থেকে মালয়শিয়ায় গিয়ে বাবার সমাধি খুঁজে বার করলেন এই সমাজকর্মী। সাহায্য করল গুগ্ল।
তিরুনেলভেলির ভেঙ্কদামপত্তি গ্রামে থাকেন তিরুমারান। বিভিন্ন সামাজিক কাজের সঙ্গে জড়িত তিনি। তিরুমারানের কথায়, ‘‘১৯৬৭ সালে মারা গিয়েছিলেন আমার বাবা। তখন তাঁর বয়স ৩৭ বছর। আমার মা রাধাবাই তাঁকে সমাধিস্থ করেন। তার পর আমায় নিয়ে ভারতে চলে আসেন। ৩৫ বছর আগে তিনিও মারা গিয়েছেন।’’
সেই থেকে বাবার সমাধি কোথায়, জানতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন তিরুমারান। খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি শুধু জানতাম, মালয়শিয়ার কার্লিংয়ে কার্লিং থোট্টা থেসিয়া ভাকাই তামিল পাল্লি নামে একটি স্কুলে পড়াতেন তিনি। গুগ্লে আমি দেখলাম, স্কুল বাড়িটি আর নেই। স্কুলটি স্থানান্তরিত হয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক কুমার চিদম্বরমের ইমেল জোগাড় করে যোগাযোগ করি। জানাই, আমি বাবার সমাধি খুঁজতে চাই।’’
তিরুমারান জানান, ওই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র মোহনা রাও এবং নাগাপ্পানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। দু’জনেরই বয়স এখন ৮০ বছরের কাছাকাছি। তাঁরা জানান, কার্লিংয়েই রয়েছে তিরুমারানের বাবার সমাধি। ৮ নভেম্বর মালয়েশিয়া ছোটেন তিনি। সেখানে গিয়ে খুঁজে পান বাবার সমাধি। তিরুমারানের কথায়, ‘‘মালয়শিয়ায় পৌঁছে দেখি বাবার সমাধি ঝোপে ঢেকে গিয়েছে। সমাধির উপর আমার বাবার ছবি ছিল। নাম, জন্ম ও মৃত্যু তারিখ লেখা ছিল। সেই দেখেই চিনতে পারি। দেশে ফিরে আসার আগে সেখানে বসে প্রার্থনা করি বার বার।’’
বাবার ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গেও দেখা করেন তিরুমারান। তাঁর বাবা কী ভাবে তাঁদের জীবন গড়ে দিয়েছিলেন, সে কথাও জানান ওই ছাত্র-ছাত্রীরা। এক ছাত্রকে কলেজ যাওয়ার জন্য একটি সাইকেলও কিনে দিয়েছিলেন। এখন তিরুনেলভেলির গ্রামে অনাথ আশ্রম চালান তিরুমারান। অন্তত ৬০ জন অনাথের বিয়ে দিয়েছেন। ১০০ জনকে চাকরি পেতে সাহায্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘অল্প বয়সে বাবা-মাকে হারিয়েছি। বুঝি অনাথ হওয়ার কষ্ট।’’