মন্দিরের নীচে টাইম ক্যাপসুল রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। —ফাইল চিত্র।
মন্দির-মসজিদের মালিকানা নিয়ে দীর্ঘ দড়ি টানাটানির পর অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে মন্দির নির্মাণে অনুমতি মিলেছে। ভবিষ্যতে যাতে এ নিয়ে আর বিতর্ক দানা না বাঁধে, তার জন্য এ বার মন্দিরের নির্মাণস্থলে রাম জন্মভূমির ইতিহাস এবং সেই সংক্রান্ত তথ্য সম্বলিত একটি টাইম ক্যাপসুল রাখা হবে। আগামী ৫ অগস্ট অযোধ্যায় রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই নিয়ে তোড়জোড়ের মধ্যেই টাইম ক্যাপসুলের কথা খোলসা করলেন রামজন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের সদস্য কামেশ্বর চৌপাল। এতে ভবিষ্যতে মন্দিরের ইতিহাস অধ্যয়নে কোনও সমস্যা হবে না বলে মত তাঁর।
সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কামেশ্বর চৌপাল বলেন, ‘রামজন্মভূমি নিয়ে দীর্ঘ সংগ্রাম এবং সুপ্রিম কোর্টে দীর্ঘ আইনি লড়াই, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে যথেষ্ট শিক্ষা দিয়েছে। রামমন্দিরের নির্মাণস্থলে, মাটির ২০০০ ফুট নীচে একটি টাইম ক্যাপসুল রেখে দেওয়া হবে, যাতে ভবিষ্যতে যদি কেউ মন্দিরের ইতিহাস অধ্যয়ন করতে চান, তখন তিনি যেন রামজন্মভূমি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যাদি হাতে পান এবং তা নিয়ে নতুন কোনও বিতর্ক মাথাচাড়া না দেয়।’’ মাটির নীচে একটি তামার পাত্রে ওই যাবতীয় তথ্যাদি রাখা থাকবে বলে জানান তিনি।
৫ অগস্ট ভূমিপুজো সম্পন্ন হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজের হাতে মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন বলে ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন রামজন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের প্রেসিডেন্ট মহন্ত নৃত্যগোপাল দাস। তার জন্য দেশের বিভিন্ন তীর্থক্ষেত্র থেকে মাটি ও পবিত্র নদীর জল অযোধ্যায় এসে পৌঁছতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন কামেশ্বর চৌপাল। তিনি বলেন, ‘‘দেশের যেখানে যেখানে ভগবান রাম পা রেখেছিলেন, আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা সেই সমস্ত তীর্থক্ষেত্র থেকে মাটি এবং সেখানকার পবিত্র নদীর জল পাঠাতে শুরু করেছেন। তা দিয়েই ভূমিপুজো অভিষেক সারা হবে।’’ বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবত সেখানে উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ফ্রান্স থেকে উড়ল প্রথম দফার ৫টি রাফাল, ভারতে পৌঁছবে বুধবার
আরও পড়ুন: রাজস্থানের সঙ্কট চরমে, আরও ব্যাখ্যা চেয়ে গহলৌতের প্রস্তাব ফেরালেন রাজ্যপাল
রামজন্মভূমি ট্রাস্টের একমাত্র দলিত সদস্য এই কামেশ্বর চৌপাল। মন্দির তৈরির সঙ্গে রাজ্যবাসীর আবেগ জড়িয়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু পড়শি দেশ নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির একটি মন্তব্য সম্প্রতি তাতে বাগড়া দেয়। অযোধ্যা নয়, নেপালের থোরিকে রামের প্রকৃত জন্মস্থল বলে উল্লেখ করেন ওলি। তাঁর এই মন্তব্য উড়িয়ে দিয়েছেন কামেশ্বর চৌপাল। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ভারতীয় সংস্কৃতি সম্পর্কে কিছুই জানেন না ওলি। নিজের দেশটাকেও ঠিক ভাবে চেনেন না। শুধুমাত্র ক্ষমতার লোভে এই ধরনের মন্তব্য করে বসেন।’’
দীর্ঘ টানাপড়েনের পর গত বছর অগস্টে অযোধ্যার ওই বিতর্কিত জমিতে মন্দির নির্মাণে অনুমতি দেয় সুপ্রিম কোর্ট। মসজিদ নির্মাণের জন্য অন্যত্র পাঁচ একর জমির বন্দোবস্ত করতে বলা হয়। তার পর এ বছর রামজন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টটি গড়া হয়। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে গত মার্চ মাসে ‘রামলালা’র মূর্তিকে অস্থায়ী একটি জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। মন্দিরের নির্মাণ সম্পন্ন হলে সেটিকে নতুন করে স্থাপন করা হবে।