অবনীর দেহ নিয়ে শিকারিরা। ফাইল ছবি।
মহারাষ্ট্রের বাঘিনী অবনী হত্যার ঘটনায় আদালত অবমাননার মামলা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হলেন পশু অধিকার আন্দোলনকর্মী সঙ্গীতা ডোগরা। শুক্রবার তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়, আদালতের নির্দেশেই হত্যা করা হয়েছিল ‘মানুষখেকো’ বাঘিনী অবনীকে। সুপ্রিম কোর্টকে এই তথ্য দেওয়া হয়েছিল মহারাষ্ট্র প্রশাসনের তরফেই। সুপ্রিম কোর্ট সঙ্গীতাকে তা জানিয়ে প্রশ্ন করেন, ‘‘মামলাটি আপনি প্রত্যাহার করবেন নাকি আদালত খারিজ করবে?’’ জবাবে বাঘিনী হত্যা মামলাটি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন সঙ্গীতা।
১০ মাসের দুই ব্যাঘ্রশাবকের মা ৫ বছরের অবনীকে ২০১৮ সালে মহারাষ্ট্রের যবতমলে মেরে ফেলা হয়। দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঢেউ ওঠে ওই ঘটনায়। এমনও অভিযোগ ওঠে, যবতমলের জঙ্গলের জমি বিনা বাধায় কর্পোরেট সংস্থার হাতে তুলে দিতেই বাঘ মারার সিদ্ধান্ত নেয় মহারাষ্ট্র সরকার। যদিও আদালতকে মহারাষ্ট্র জানিয়েছে, আদালতের নির্দেশ মেনেই ‘মানুষখেকো’ বাঘটিকে মারার দায়িত্ব দেওয়া হয় শিকারি আসগার আলিকে।
পশু অধিকার আন্দোলনকর্মী সঙ্গীতা অবশ্য এই তত্ত্বের বিরোধিতা করেন। আদালতকে অবনীর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দিয়ে তিনি জানান, অবনী আদপেই মানুষখেকো বাঘ ছিল না। তা ছাড়া বাঘিনী হত্যার পর এলাকার বাসিন্দারা যে ভাবে উৎসবে মেতেছিলেন, তা-ও নিন্দনীয়। সঙ্গীতা বলেন, শিকার করার পর যে ভাবে আসগার আলির হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়িছেল, তাতে মনে হচ্ছিল, আমোদের জন্যই হত্যা করা হয়েছে অবনীকে। তার চেয়েও অমানবিক বিষয় হল, অবনীকে হত্যার পর গ্রামবাসীদের উৎসবের শরিক হয়েছিলেন বন দফতরের কর্মীরাও। সঙ্গীতার আর্জি ছিল, যাঁরা ওই বাঘটিকে হত্যায় অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে মামলা হোক। শুক্রবার সেই মামলাটিই সঙ্গীতাকে প্রত্যাহার করতে বলে সুপ্রিম কোর্ট।
শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবদে সঙ্গীতাকে বলেন, ‘‘আপনি এই মামলাটি করার আগে আমাদের একবারও বলেননি, শীর্ষ আদালেতর নির্দেশেই অবনীকে মারা হয়েছিল। তাই আমরা মামলাটি আর নতুন করে শুরু করব না। সঙ্গীতা শীর্ষ আদালতকে বলেছিলেন, এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলেই তিনি এই আবেদন করছেন। জবাবে প্রধান বিচারপতি তাঁকে বলেন, ‘‘হ্যাঁ, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই আমরা জানতে চাইছি আবেদনটি আপনি প্রত্যাহার করবেন নাকি আমরা খারিজ করব।’’ জবাবে সঙ্গীতা সুপ্রিম কোর্টকে বলেন, তিনিই প্রত্যাহার করছেন মামলাটি।