নদীপ কউর।
শ্রমিক অধিকার নিয়ে আন্দোলনকারী নদীপ কউর জামিন পেলেন। গত ১২ জানুয়ারি থেকে জেলবন্দি নদীপ।তাঁর অভিযোগ,পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন তাঁর যৌন হেনস্তা করা হয়। শুক্রবার পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট নদীপের জামিন মঞ্জুর করে জানিয়েছে, তাঁর মেডিক্যাল পরীক্ষার রিপোর্টও খতিয়ে দেখা হবে।
হরিয়ানার কারনাল জেলে গত দেড়মাস ধরে বন্দি নদীপ। নদীপের বোন সমাজকর্মী রাজবী কউরের অভিযোগ, হেফাজতে থাকাকালীন তাঁর দিদির উপরশারীরিক অত্যাচার করেছেন পুরুষ পুলিশকর্মীরা। এমনকি দিদির গোপনাঙ্গে অত্যাচারের জখম আছে বলেও দাবি করেন রাজবীর। ১২ জানুয়ারি পঞ্জাবের কুণ্ডলি সীমানা থেকে গ্রেফতার করা হয় নদীপকে। বুধবার তাঁর জামিন সংক্রান্ত মামলাটি হাইকোর্টে ওঠে। কিন্তু প্রশাসন নদীপের মেডিক্যাল পরীক্ষার সমস্ত রিপোর্ট পেশ না করায় হাইকোর্ট মামলাটির রায় স্থগিত রাখে।
কউরের আইনজীবী হরেন্দ্র দীপ সিংহ বইঁস শুক্রবার জানিয়েছেন, হাইকোর্ট নদীপের মেডিক্যাল রিপোর্ট খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে। পাশাপাশি পুলিশের বিরুদ্ধে নদীপকে বেআইনি ভাবে বন্দি রাখার যে অভিযোগ জানানো হয়েছিল, সেই মামলাটিও আলাদা করে শোনা হবে বলে আশ্বস্ত করেছে আদালত। আদালত শুক্রবার জানিয়েছে, নদীপের ক্ষেত্রে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬০ ধারার অধীনে খারাপ আচরণ বা শৃঙ্খলাভঙ্গের কোনও রেকর্ড মেলেনি।
সোনেপতের একটি সংস্থার প্রাক্তন কর্মী নদীপ ১২ জানুয়ারি শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির দাবিতে একটি আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করার পর তাঁর বিরুদ্ধে খুন, তোলাবাজি, চুরি, দাঙ্গা, অবৈধ জমায়েত, ভীতি প্রদর্শনের মামলা দায়ের করে। এর মধ্যে টাকা আদায় ও ভীতি প্রদর্শনের মামলায় আগেই জামিন দেওয়া হয় নদীপকে। শুক্রবার হত্যার মামলাটি থেকেও জামিন পেয়েছেন তিনি।
শ্রমিক আন্দোলন আর কৃষি আন্দোলন একই সময়ে চলছিল পঞ্জাব সীমানায়। সময়ের কারণেই আন্তর্জাতিক দুনিয়ার নজর টানে নদীপের গ্রেফতারি। আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের বোনঝি মীনা হ্যারিস নদীপের গ্রেফতারি ও পুলিশি হেফাজতে তাঁর যৌন হেনস্থার অভিযোগ নিয়ে ট্যুইট করেন। মীনা লিখেছিলেন, ‘২৩ বছরের এক শ্রমিক আন্দোলনকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে ভারতে। তাকে পুলিশি হেফাজতে রেখে অত্যাচারের পাশাপাশি যৌন হেনস্থাও করা হচ্ছে’। এই টুইটের সঙ্গে নদীপের ছবি পোড়ানোর একটি ফটোও শেয়ার করেন মীনা হ্যারিস।